৩ সেকেন্ডেই কোহলিকে রাজি করান সৌরভ

খেলাধুলা

স্পোর্টস ডেস্ক: ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে কলকাতায় দিবারাত্রির টেস্ট খেলার জন্য রাজি করতে সক্ষম হয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলী। প্রেসিডেন্টের আসনে বসার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে গোলাপি বলে টেস্টের বিষয়ে বিসিসিআইয়ের অবস্থানও সফলতার সঙ্গে পরিবর্তন করতে সক্ষম হন তিনি। তিন বছর আগেই বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে এ বলে খেলা চালু করেন দাদা।

গোলাপি বলে টেস্ট খেলতে ইতিপূর্বে অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত। তবে আগামী ২২-২৬ নভেম্বর ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো দিবারাত্রির টেস্টে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন তারা। অবশ্য চার বছর আগে দিবারাত্রির ম্যাচ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।

গত ২৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ে কোহলি ও নির্বাচক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন সৌরভ। তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে ভারত কেন অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে রাজি হয়নি, আমি জানি না। এর কারণ কী তাও জানি না। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকের শুরুতেই আমি কোহলিকে বলি, আমাদের দিবারাত্রির টেস্ট খেলা দরকার। তিন সেকেন্ডের মধ্যেই জবাব দেন ভারতীয় বর্তমান অধিনায়ক। বলেন, চলেন সেই দিকেই এগিয়ে যাই।

পাঁচবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার সাইমন টাফেলের ‘ফাইন্ডিং দ্য গ্যাপ’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। গত বছর অ্যাডিলেড ওভালে ভারতকে গোলাপি বলে ক্রিকেট খেলার প্রস্তাব দেয় অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজও একই ধরনের প্রস্তাব দেয় ভারতীয়দের। কিন্তু বিসিসিআই রাজি হয়নি।

সৌরভ বলেন, আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, তখন কী ঘটেছিল। এমন খেলায় সম্মত না হওয়ার কারণইবা কী? তবে দিরারাত্রির টেস্ট আমার কাছে সঠিক মনে হচ্ছে। বিরাট অনুধাবন করেন, দর্শকবিহীন মাঠে টেস্ট আয়োজন করে কোনোভাবেই এটিকে এগিয়ে নেয়া যাবে না।

মহারাজের মতে, এ ধারা পুনরায় উপমহাদেশে টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। সবশেষ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজও সমর্থকদের মধ্যে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। যদিও সিরিজে সফরকারী প্রেটিয়াদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেন স্বাগতিকরা।

বিসিসিআইপ্রধান বলেন, আমি জানি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রতিটি ম্যাচেই গোটা স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ করে দেন দর্শক। কিন্তু সঠিকভাবে আয়োজন সত্ত্বেও টেস্ট ক্রিকেটে তাদের মাঠে ফিরিয়ে আনা যায় না। তাই আমরা ভারতেই এটি শুরু করতে চাই। আমার মনে হয়, নতুন ধারার এ টেস্ট দর্শকদের মাঠে ফিরিয়ে আনবে।

এখন মানুষের লাইফস্টাইল পাল্টে গেছে। আপনি ইচ্ছে করলেও কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ পরিবর্তনই ভালো। বিপণনের জন্যও এ ধারার খেলা বেশি উপযুক্ত হবে বলে উল্লেখ করেন সৌরভ।

প্রিন্স অব ক্যালকাটা বলেন, আপনি যখন নিজের সুবিধা বিসর্জন দিতে পারবেন, তখনই ভেবে বের করতে পারবেন কোনটি আসলে বেশি ভালো হবে। আমার মনে হয়, গোলাপি বলের এ ক্রিকেট দর্শকদের ফের মাঠে ফিরিয়ে আনবে। ফলে টেস্ট ক্রিকেটকেও ভালোভাবে মার্কেটিং করা যাবে।

গাঙ্গুলী এ সময় স্মরণ করিয়ে দেন ২০০১ সালের ইডেন গার্ডেনে টেস্টের কথা। যেখানে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭১ রানে হারায় ভারত। তিনি বলেন, আমার ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় এমসিজিতে। সেটি ছিল বক্সিং ডে টেস্ট। ওই রকম একটি মুহূর্ত পাওয়াকে আপনি অবশ্যই ভাগ্যবান মনে করবেন। ওই টেস্টের প্রথম দিনে মাঠে ৭০ হাজার দর্শক সমাগম ঘটে। যেমনটি সচরাচর দেখা যায় অ্যাশেজ সিরিজে। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *