রাসিক পরিচ্ছন্নকর্মীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটার সাব্বির

খেলাধুলা

স্টাফ রিপোর্টার: মারধরের অভিযোগ ওঠার পর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) পরিচ্ছন্নকর্মী বাদশার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। রাসিকের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিযাম-উল-আযীম বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রোববার (৩১ মে) রাতেই তার কাছে যান সাব্বির এবং তার বাবা। ডাকা হয় পরিচ্ছন্নকর্মীকেও। তখন উভয়পক্ষই দুঃখ প্রকাশ করে।

এর আগে রোববার বিকালে নগরীর বেলদারপাড়া এলাকায় সাব্বির পরিচ্ছন্নকর্মী বাদশার বুকে একটি ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর অন্য পরিচ্ছন্নকর্মীরাও সাব্বিরের বাড়ির সামনে যান। সাব্বির দুঃখ প্রকাশ না করলে তার বাসার ময়লা নিয়ে যাওয়া হবে না বলে তারা ঘোষণা দেন। এর আগে ঘটনার পরই সাব্বির বিষয়টি সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং কাউন্সিলর নিযাম-উল-আযীমকে জানান। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টির সমাধান চান তিনি।

কাউন্সিলর নিযাম-উল-আযীম বলেন, খুবই ছোট ঘটনা। কিন্তু বিষয়টা নিয়ে অনেক বাড়াবাড়ি হয়ে গেল। রাতে সাব্বির এবং তার বাবা এসেছিলেন। পরিচ্ছন্নকর্মী বাদশাকেও ডাকা হয়েছিল। এ সময় সাব্বির এবং তার বাবা দুঃখ প্রকাশ করেন। বাদশাও দুঃখ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, এ রকম ঘটনা ঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে সবাই সতর্ক থাকবেন। এভাবে মিমাংসা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে রাসিকের পরিচ্ছন্নকর্মী বাদশা বলেন, যেভাবে চোখ রাঙিয়ে ছুটে এসে সাব্বির আমাকে বুকে আঘাত করেছিল, তাতে খুব ব্যাথা পাইছি। তবে মনের ব্যাথাটা বড় ব্যাথা। আমি সাব্বিরের বাবার বয়সী। ছেলের বয়সী কেউ গালি দিয়ে আঘাত করলে কষ্টটা বেশি লাগে।

বাদশায় উল্টো চোখ রাঙিয়েছেন বলে সাব্বিরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ময়লা ফেলার কাজ করি। সাব্বিরকে না হয় নাইবা চিনলাম। গাড়ি নিয়ে কেউ হর্ণ দিলে তাকে আমি চোখ রাঙাবো সেই সাহস কি আমার আছে?

তিনি বলেন, যা হয়ে গেছে, তা নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। কাউন্সিলর সাহেব সব মিটমাট করে দিয়েছেন। তারা (সাব্বিরের পরিবার) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ওপর থেকেও কারও সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছে। আর কিছু না বলা আমার জন্য এখন ভালো।

এর আগে রাতে সাব্বির ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন, তিনি এবং তার স্ত্রী গাড়িতে চড়ে বাইরে থেকে আসেন। এ সময় তার বাড়ির সামনে সিটি করপোরেশনের ময়লা নিয়ে যাওয়ার একটি ভ্যান দাঁড়িয়ে ছিল। যার কারণে তিনি বাসায় গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারছিলেন না। দুই মিনিট ধরে হর্ণ দেয়ার পর আসেন পরিচ্ছন্নকর্মী বাদশা। তখন তার সঙ্গে শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে দাবি করেন সাব্বির।

তিনি বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মাঝ রাস্তায় কাউকে কি মারধর করা এতই সহজ? বাদশা আমার পরিচিত। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করি। তার কাছ থেকে এমন আচরণ আমি প্রত্যাশা করিনি। ঘটনা কিছুই না, কিন্তু আমার শত্রæর অভাব নেই। তারা বিষয়টাকে বড় করার চেষ্টা করছে, যেন এক সময় সবাই বলে দোষ সাব্বিরেরই। কিন্তু আগে যা করেছি, ছোট ছিলাম। এখন কেন এসব করতে যাব! গরীব মানুষকে মেরে লাভ আছে?

রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ‘ম্যাও’ বলে ডাকার কারণে এক কিশোরকে মারধর করেছিলেন সাব্বির রহমান। এ কারণে ছয় মাসের জন্য জাতীয় দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তিনি। তারপর ফিরেছেন জাতীয় দলে। কিন্তু এবার তার বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্নকর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন এই ক্রিকেটার।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *