বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি মেহেদির নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয়ে শুরু রাজশাহীর

খেলাধুলা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: মেহেদি হাসানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় দিয়ে বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু করলো মিনিষ্টার গ্রুপ রাজশাহী। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ঢাকাকে ২ রানে হারিয়েছে রাজশাহী। তীব্র প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট হাতে ৩২ বলে ৫০ রান ও শেষ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দারুন বোলিং করে ঢাকার বিপক্ষে রাজশাহীর জয়ে বড় অবদান রাখেন মেহেদি হাসান।

টস জিতে প্রথমে বোলিং এর সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তাই প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান করে রাজশাহী। ৩২ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেছেন রাজশাহীর মেহেদি হাসান। জবাবে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৭ রান করে ঢাকা।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলো রাজশাহীর দুই ওপেনার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও আনিসুল ইসলাম ইমন। ২৩ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন তারা।

২টি ছক্কায় ১৬ বলে ১৭ রান করে ঢাকার স্পিনার নাসুম আহমেদের বলে আউট হন শান্ত। এরপর তিন ব্যাটসম্যান- রনি তালুকদার, মোহাম্মদ আশরাফুল ও ফজলে মাহমুদ দ্রুতই ফিরেন। রনি ৬, আশরাফুল ৫ রান করে ঢাকার পেসার মুক্তার আলীর শিকার হন। রানের খাতা না খুলেই রান আউট হন ফজলে। এর মাঝে ২৩ বলে ৩৫ রান করে থামেন ওপেনার ইমন। তার ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো।

দলীয় ৬৫ রানে রাজশাহীর পঞ্চম উইকেট পতনের দলের হাল ধরেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান ও মেহেদি। ঢাকার বোলারদের উপর আক্রমনাত্মক ব্যাট চালান তারা। ষষ্ঠ উইকেটে ৪৯ বলে ৮৯ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন নুরুল ও মেহেদি।

২০ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রান করে ঢাকার মুক্তারের তৃতীয় শিকার হন নুরুল। তবে ৩১ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মেহেদি। হাফ-সেঞ্চুরিতে পা দিয়েই থামতে হয় তাকে। মেহেদির ইনিংসে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিলো। শেষদিকে ফরহাদ রেজার ৬ বলে অপরাজিত ১১ রানে লড়াকু পুঁজিতে পৌঁছায় রাজশাহী। ঢাকার মুক্তার ৪ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট নেন। ১৭০ রানের লক্ষ্যে ভালো শুরু হয়নি ঢাকার। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। তবে তাদের রান তোলার গতি ছিলো ওভারপ্রতি ৮এর কাছে।

দুই ওপেনার তানজীদ হাসান-ইয়াসির আলি যথাক্রমে ১৮ ও ৯ রান করেন। তিন নম্বরে নামা মোহাম্মদ নাইম ২৬ রানে ফিরেন। ৪১ বলে ৩ উইকেট পতনের পর দলকে খেলায় ফেরান অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আকবর আলী। ৫৩ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন তারা। এরমধ্যে ২৯ বলে ৩৪ রান অবদান ছিলো আকবরের। তার ইনিংসে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো।
আকবরকে শিকার করে রাজশাহীকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার ফরহাদ। আকবরের ফিরে যাবার কিছুক্ষণ পর আউট হন মুশফিকও। এমন অবস্থায় ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় ঢাকা। ম্যাচ জিততে শেষ ৩ ওভারে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৬ রানের প্রয়োজন পড়ে তাদের। ১৯তম ওভারে ফরহাদকে তিনটি ছক্কা মারেন মুক্তার আলী। তাতে ম্যাচ জয়ের সুযোগ তৈরি হয়ে যায় ঢাকার সামনে। শেষ ওভারে ৯ রানের দরকার পড়ে তাদের।

শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে কোন রান দেননি রাজশাহীর মেহেদি। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি তুলে নেন মুক্তার। পরের ডেলিভারিটি নো-বল করেন মেহেদি। তাতে শেষ ২ বলে ৪ রানের সমীকরন দাড়ায় ঢাকার সামনে।

পঞ্চম বল ডট ও শেষ বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেননি মুক্তার। ফলে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৭ রান পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয় ঢাকা। দলের সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন মুশফিক। তার ৩৪ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। রাজশাহীর মেহেদি ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। ব্যাট হাতে ৫০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন মেহেদি। তাই ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী : ১৬৯/৯, ২০ ওভার (মেহেদি ৫০, নুরুল ৩৯, মুক্তার ৩/২২)।
বেক্সিমকো ঢাকা : ১৬৭/৫, ২০ ওভার (মুশফিক ৪১, আকবর ৩৪, মেহেদি ১/২২)।
ফল : মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মেহেদি হাসান (মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী)।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *