ঢাকাকে বিদায় করে ফাইনালে চট্টগ্রাম

খেলাধুলা

স্বদেশবাণী ডেস্ক: বেক্সিমকো ঢাকাকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে খুলনার সঙ্গী হলো গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের ঢাকাকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় মিঠুনের চট্টগ্রাম।

এর আগে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে চট্টগ্রামকে ৪৭ রানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে জেমকন খুলনা। আগামী ১৮ ডিসেম্বরের শিরোপার লড়াইয়ে মাহমুদুল্লাহ-মাশরাফিদের প্রতিপক্ষ সৌম্য-লিটন-মুস্তাফিজরা।

আজ প্রথমে ব্যাট করা ঢাকাকে ১১৬ রানে গুটিয়ে দেয় চট্টগ্রামের বোলাররা। পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ৩২ রানে ৩টি ও শরিফুল ইসলাম ১৭ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে ৫ বল বাকী থাকতে ও মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে ফাইনালের টিকিট পায় চট্টগ্রাম।

এর আগে গতকাল এলিমিনেটর ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৫০ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও ফরচুন বরিশালকে হারিয়েছিলো ঢাকা বেক্সিমকো। তাই এ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয় মুশফিক এন্ড কোং।

হার্ড-হিটার সাব্বির রহমানের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন মুক্তার আলী। দলের হয়ে শুভ সূচনা এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন দুজনেই। সাব্বির ১১ বলে ১১ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে আউট হন। আর অফ-স্পিনার নাহিদুল ইসলামের শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৭ রানে আউট হন মুক্তার। ১৯ রানেই পরপর দু’বলে আউট হন ঢাকার দুই ওপেনার।

এর পর দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ নাইম ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। উইকেট বাঁচিয়ে খেলে দলের স্কোর অর্ধশতকে পৌঁছে দেন নাইম-মুশফিক। তবে দু’জনই বেশ ধীর গতিতে খেলেন। নবম ওভারের তৃতীয় বলে লিগ পর্বে সেঞ্চুরি করা নাইমকে ১২ রানে আটকে ফেলেন চট্টগ্রামের বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান।

দলীয় ৫০ রানে নাইমের বিদায়ের পর ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন ইয়াসির আলি। দু’জনের কাছে বড় জুটির প্রত্যাশা ছিলো দলের। কিন্তু সেটি হতে দেননি মোসাদ্দেক হোসাইন সৈকত। ২টি চারে ৩১ বলে ২৫ রান করা মুশফিককে তুলে নেন এই স্পিনার।

১৪তম ওভারে দলীয় ৭৫ রানে মুশফিকের আউটের পর ব্যর্থ হন ইয়াসির ও আকবরও। ফলে ঢাকার বড় স্কোরের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তাই-ই হয়েছে। শেষদিকে বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের ৩ উইকেট শিকারে ১১৬ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় ঢাকা।

১৯তম ওভারে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। ঐ ওভারের দ্বিতীয় বলে আল-আমিনকে ও তৃতীয় বলে নাসুমকে শিকার করেন তিনি। তার আগে ইয়াসির শিকার হয়েছিলেন ফিজের। ইয়াসির ২১ বলে ২৪ ও আল-আমিন ১৮ বলে ২৫ রান করেন। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন।

আর এতেই ফাইনালে উঠতে ১১৭ রানের টার্গেট পায় চট্টগ্রাম। শুরু থেকে খুব বেশি সুবিধা করতে না পারলেও চট্টগ্রামের দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার ৬ ওভারে তোলেন ৪২ রান। সপ্তম ওভারের শেষ বলে রান আউটের ফাঁদে পড়ে সৌম্য। ৫টি চারে ২৩ বলে ২৭ রান করেন তিনি।

সতীর্থকে হারানোর পর দলকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব নেন লিটন ও অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। সর্তকতার সাথে এগোতে থাকেন তারা। তাই ১০ ওভার শেষে চট্টগ্রামের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৫৯-এ। ১৫ ওভার শেষেও অবিচ্ছিন্ন থাকেন লিটন ও মিঠুন। তখন রান হয় ৯০। তবে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় ঘটে লিটনের।

অফ-স্পিনার আল-আমিনের বলে সাব্বিরকে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন লিটন। তার আগে মিঠুনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন লিটন। বল খেলেছেন ৬১টি। আর নিজে ৪টি চারে ৪৯ বলে করেন ৪০ রান।

লিটন যখন ফিরেন তখন জয় থেকে ১৬ রান দূরে দাড়িয়ে চট্টগ্রাম। বল ছিলো ১৭টি। এই সহজ কাজটি সম্পন্ন করেই মাঠ ছাড়ার সুযোগ ছিলো অধিনায়কের। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুক্তার আলিকে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছেই সাব্বিরের তালুবন্দি হন মিঠুন।

আগের বলেই এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মারা মিঠুনের ব্যক্তিগত সংগ্রহ তাই ৩৫ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪। এরপর দলের প্রয়োজনীয় ৯ রান তুলেছেন শামসুর রহমান ও মোসাদ্দেক হোসাইন। শামসুর ৮ ও মোসাদ্দেক ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বেক্সিমকো ঢাকা: ১১৬/১০, ২০ ওভার (মুশফিক ২৫, আল-আমিন ২৫, মুস্তাফিজ ৩/৩২)।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১১৭/৩, ১৯.১ ওভার (লিটন ৪০, মিঠুন ৩৪, আল-আমিন ১/৪)।
ফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মুস্তফিজুর রহমান (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম)।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *