মুসলিমবিদ্বেষী টুইট করা ইংল্যান্ডের সেই পেসার নিষিদ্ধ

খেলাধুলা

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  টুইটে মুসলমানদের আক্রমণ করে নিষিদ্ধ হয়েছেন ইংল্যান্ডের পেসার অলিভার রবিনসন।

ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে অভিষেকে দারুণ নৈপূন্য দেখানোর পর এই দুঃসংবাদ পেলেন অলিভার।

তার অপরাধ, মুসলিমবিদ্বেষী ‘বর্ণবাদী ও ‘যৌনতাপূর্ণ’ কথা লিখেছিলেন টুইটে।

বৃহস্পতিবার লর্ডসে বল হাতে নেওয়ার পর থেকেই রবিনসনের সেসব টুইট একের পর এক প্রকাশ্যে আসতে থাকে।  ক্রিকেটভক্তদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক উস্কে দেয় এসব টুইট। অনেকেই তাকে বর্ণবাদী বলে আখ্যা দেন।

তবে নিজেকে পাল্টে ফেলেছেন দাবি করে বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন রবিনসন। কিন্তু তাতে পার পেলেন না।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হলেন ২৭ বছর বয়সী এই পেসার। অর্থাৎ লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে স্মরণীয় অভিষেকের পরই দল থেকে ছিটকে গেলেন তিনি।

ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, রবিনসনের বিতর্কিত সেসব টুইট নিয়ে তদন্তে নেমেছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। যার ফল না আসা পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকবেন রবিনসন। সে অর্থে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া কিউইদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট একাদশে ঠাঁই হচ্ছে না তার। আন্তর্জাতিকে নিষিদ্ধ হলেও কাউন্টিতে খেলতে পারবেন রবিনসন। তাকে সাসেক্সে যেতে বলা হয়েছে।

২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত রবিনসনের করা ওই টুইটগুলোতে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে মুসলিমদের সম্পৃক্ততার দাবি করা হয়েছে। এছাড়া এশিয়ান বংশোদ্ভূত ও নারীদের প্রতি ছিল অবমাননাকর মন্তব্য।

রবিনসনের এসব টুইট দেখে হতাশ ও বিস্মিত ইসিবি।  ক্ষুব্ধ হয়েছেন দলটির ব্যাটিং কোচ গ্রাহাম থ্রোপও।

ইসিবির প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন বলেছেন, ‘ইংল্যান্ড পুরুষ দলের একজন খেলোয়াড়ের টুইটারে এমন সব বার্তা! আমি কতটা হতাশ হয়েছি তা প্রকাশ করার ভাষা নেই।  যে কেউ বিশেষ করে নারীরা রবিনসনের ওই টুইটগুলো পড়লে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের সম্পর্কে যে ধারণা করবেন, সেটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’

এদিকে সব দোষ স্বীকার করে রবিনসন জানিয়েছেন, টুইটগুলো করার সময় তার বয়স ছিল ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। লেস্টারশায়ার, কেন্ট ও ইয়র্কশায়ারের দ্বিতীয় দলের হয়ে খেলতেন তিনি। জ্ঞানবুদ্ধি ও মানসিকভাবে অপরিপক্ক ছিলেন।

টেস্ট অভিষেকের দিন খেলা শেষে ক্ষমা চেয়ে রবিনসন বলেছিলেন, আট বছর আগের বর্ণবাদী ও সেক্সিস্ট টুইটের জন্য আমি  ভীষণভাবে বিব্রত, লজ্জিত ও অনুতপ্ত। আমি এটা স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, আমি এখন আর বর্ণবাদী ও লিঙ্গবাদী নই। আমি ওই সময় অবিবেচক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন ছিলাম।  আমার মানসিকতা নিয়ে উদাসীন ছিলাম। কোনো বিষয়ের গভীরে যাওয়ার ব্যাপারে অক্ষম ছিলাম। এখন আর সেই নির্বোধ নই আমি। আমি এখন একজন মানুষ হিসেবে পরিণত হয়েছি। ওই টুইটগুলোর জন্য পুরোপুরি দুঃখপ্রকাশ করি। যদিও তখন আমার মানসিক অবস্থা যেমনই থাকুক, তা কোনো অজুহাত হতে পারে না। গত কয়েক বছরে জীবনকে নতুনভাবে গড়তে কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং যথেষ্ট পরিণত হয়েছি বলে মনে করি। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই— আমি বর্ণবাদী ও লিঙ্গবাদী নই।

তথ্যসূত্র: টুইটার, দ্য গার্ডিয়ান, ক্রিকইনফো, বিবিসি

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *