কোপার ভাগ্য ঝুলছে ব্রাজিলের আদালতে

খেলাধুলা

স্বদেশবাণী ডেস্ক: আয়োজক পাল্টেও জটিলতা কাটছে না কোপা আমেরিকার।

১৩ জুন ব্রাসিলিয়ার ‘মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে’ ব্রাজিল-ভেনিজুয়েলা ম্যাচ দিয়ে এই ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট শুরু হবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। যদিও এতে খেলতে রাজি হয়েছে ব্রাজিল।

কিন্তু করোনাকালে এ টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ আদালত আপত্তি তুলেছেন।  সে ক্ষেত্রে আটকে যেতে পারে দক্ষিণ আমেরিকার জনপ্রিয় এই ফুটবল আসর।

শুরুর দিকে করোনাকালে কোপা আমেরিকা আয়োজনের বিরোধিতা করেন নেইমাররা।  পরে নেইমার, কাসিমিরো ও তাদের কোচ তিতের মন হঠাৎ গলে গেলে কোপা আমেরিকার এবারের আসর ব্রাজিলেই হবে বলে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।

এ নিয়ে চলমান নাটকের অবসান ঘটেছে বলে স্বস্তি প্রকাশ করেন ফুটবলপ্রেমীরা।

কিন্তু না, ফুটবলার আয়োজকদের সম্মতি মিললেও কোপার ভাগ্য ঝুলছে আদালতে।  সেখানেই নাটকের শেষ দৃশ্যায়ন ঘটবে।

ব্রাজিলের জনগণ ও করোনাঝুঁকির বিষয়টি আমলে নিয়েছেন আদালত।

১০ দলের এ টুর্নামেন্ট ব্রাজিলেই হবে কিনা তা নিয়ে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট আপত্তি তুলেছেন।

বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেছে ব্রাজিলের জাতীয় মেটাল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, কংগ্রেসের বিরোধীদলীয় সদস্য হুলিও দেলগাদো আর তার দল ব্রাজিলিয়ান সোশ্যালিস্ট পার্টি (পিএসবি)। ইউনিয়ন বলছে, কোপা আমেরিকা আয়োজনে ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়বে’।

করোনায় জেরবার ব্রাজিলে যেন এ আসর আয়োজিত না হয়, সে ব্যাপারে একমত দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

গণমাধ্যমে প্রধান বিচারপতি লুইস ফাক্স বলেছেন, অনলাইনে ১১ সদস্যের আদালত বসিয়ে বিষয়টির শুনানি করা হবে।

তবে হাল ছাড়ছেন না আয়োজকরা। করোনার ঝুঁকি এড়াতে সবরকম কড়াকড়ি আরোপ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

কোপা কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি ৪৮ ঘণ্টায় প্রতিটি দলকে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা করাবে তারা। ভাড়া করা বিমানে দলগুলোকে ম্যাচের আগে নেওয়া হবে ভেন্যুতে।

কিন্তু আয়োজকদের এমন সব প্রতিশ্রুতিতে মন গলেনি আদালতের।  আজকালের মধ্যে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আদালত। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য দেবেন তারা।

উল্লেখ্য, শুরু থেকে কোপা নিয়ে ঝামেলায় পড়েছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো। কথা ছিল এবারের আসরটি যৌথভাবে আয়োজন করবে কলাম্বিয়া ও আর্জেন্টিনা।

রাজনৈতিক অস্থিরতার অজুহাতে নিজেদের গুটিয়ে নেয় কলাম্বিয়া। ফলে গোটা টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য আর্জেন্টিনার দারস্থ হয় কোপা কর্তৃপক্ষ।

করোনার দোহাই দিয়ে আর্জেন্টিনাও সরে দাঁড়ায়।

কলাম্বিয়া ও আর্জেন্টিনা থেকে কোপা সরিয়ে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই শেষ মুহূর্তে হুট করে আয়োজনের দায়িত্ব নেয় ব্রাজিল।

মহামারির মধ্যে দেশে কোপা আয়োজনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন ব্রাজিলের ফুটবলাররা।

কোপা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন দেশটির সুপারস্টার নেইমারসহ আরও অনেকে।

শিষ্যদের কোপায় না খেলার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান কোচ তিতে।

ব্রাজিলের সাধারণ মানুষও বর্তমান পরিস্থিতিতে কোপা আয়োজনের বিপক্ষে। এ নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে দেশটিতে।

পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে অবস্থান থেকে সরে এসে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা জানিয়েছেন, তারা অংশ নেবেন ১০ দলের এ টুর্নামেন্টে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *