রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শ্রীলংকার জয়

খেলাধুলা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অবশেষে শ্রীলংকার জয়। সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল মালিঙ্গা-ম্যাথিউসরা। উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়েও বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল লংকানরা। তবে শেষ দিকে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের বোলিং নৈপুণ্যে পরাজয়ের দুশ্চিন্তা কাটিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে ১৯৯৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

শেষ দিকে জয়ের জন্য ১৮ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৩১ রান। খেলার এমন অবস্থায় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস নিজের প্রথম ওভারে বোলিং এসেই নিকোলাস পুরানকে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন।১১৮ রানে পুরানের বিদায়ে জয়ের স্বপ্ন আবারও ভেঙে যায় উইন্ডিজের।

এর আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও এরকম শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে কার্লোস ব্রাথওয়েটের ব্যাটে জয় দেখেছিল ক্যারিবীয়রা। সেই ম্যাচেও তীরে গিয়ে তরী ডুবে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

সোমবার ইংল্যান্ডের রিভারসাইড গ্রাউন্ডের চেস্টার-লি স্ট্রেটে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে অভিষেক ফার্নান্দোর সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৩৮ রান করে শ্রীলংকা।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে লাসিথ মালিঙ্গার বোলিং তোপের মুখে ৮৪ রানে ৪ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। সুনিল অ্যামব্রোস, শাই হোপ, ক্রিস গেইল ও সিমরন হিতমারের উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে পড়া ক্যারিবীয় দলকে খেলায় ফেরান নিকোলাস পুরান।

পঞ্চম উইকেটে জেসন হোল্ডারের সঙ্গে ৬১ রানের জুটি গড়েন পুরান। ২৬ রানে হোল্ডার বিদায় নিলে কার্লোস ব্রাথওয়েটের সঙ্গে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। এরপর ফ্যাবিয়ান অ্যালানের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে গড়েন ৮৩ রানের জুটি। আর এই জুটিতেই জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

জয়ের জন্য শেষ দিকে ৩৬ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৫৭ রান। খেলার এমন অবস্থায় ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে ফেরেন ফ্যাবিয়ান অ্যালান। তার আগে ৩২ বলে সাতটি চার ও এক ছক্কায় ৫১ রান করেন।

তবে অসাধারণ ব্যাটিং করে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেও দলকে জয় উপহার দিতে ব্যর্থ হন নিকোলাস পুরান। ইনিংস শেষ হওয়ার ১৭ বল আগে ১০৩ বলে ১১টি চার ও চারটি ছক্কায় ১১৮ রান করেন তিনি।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে শ্রীলংকা। উদ্বোধনী জুটিতে প্রথম ১০ ওভারে ৪৯ রান সংগ্রহ করেন দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ও কুশল পেরেরা। তারা জুটির শতরান গড়ার পথেই ছিলেন।

১৫.২ ওভারে জেসন হোল্ডারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন দিমুথ করুনারত্নে। তার আগে ৯৩ রানের জুটি গড়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে ৪৮ বলে ৩২ রান করেন লংকান অধিনায়ক। তার বিদায়ের ঠিক ১১ রানের ব্যবধানে নেই কুশল পেরেরার উইকেট। ইনিংসের শুরু থেকে একের পর এক বাউন্ডরি হাঁকিয়ে ফিফটি তুলে নেয়া কুশল পেরেরা রান আউট হন। তার আগে ৫১ বলে আটটি চারের সাহায্যে ৬৪ রান করেন তিনি।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে অভিষেক ফার্নান্দোর সঙ্গে ৮৫ রানের জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস। ৪১ বলে চারটি বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করেন আউট হন মেন্ডিস। এরপর অ্যাঞ্জোলো ম্যাথিউসকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ফের ৫৮ রানের জুটি গড়েন ফার্নান্দো।

আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে যাওয়া ম্যাথিউস ২০ বলে ২৬ রান করতেই জেসন হোল্ডার বলে বোল্ড হয়ে যান। তবে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে যান অভিষেক ফার্নান্দো। ক্যারিয়ারের নবম ম্যাচ খেলতে নেমে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে শতরানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তার অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়ে শ্রীলংকা।

ইনিংস শেষ হওয়ার ১৬ বল আগে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ফার্নান্দো। তার আগে দলের হয়ে ১০৩ বলে নয়টি চার ও দুটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ১০৪ রান করেন। তবে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করে ৩৩ বলে চারটি বাউন্ডারিতে অপরাজিত ৪৫ রান করেন লাহিরু থিরিমান্নে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলংকা: ৫০ ওভারে ৩৩৮/৬ (ফার্নান্দো ১০৪, কুশল পেরেরা ৬৪, লাহিরু থিরিমান্নে ৪৫*, কুশল মেন্ডিস ৩৯, ম্যাথিউস ২৬; জেসন হোল্ডার ২/৫৯)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩১৫/৯ (নিকোলাস ১১৮, ফ্যাবিয়ান ৫১, গেইল ৩৫, হিতমার ২৯, হোল্ডার ২৬; মালিঙ্গা ৩/৫৫)।

ফল: শ্রীলংকা ২৩ রানে জয়ী।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *