তিন ‘হেড কোচ’ একসঙ্গে কাজ করছেন, কী ভাবছেন ডোমিঙ্গো?

খেলাধুলা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল আজ। মাঠের প্যাভিলিয়ন প্রান্তের পশ্চিম পাশের দুই নেটে পাশাপাশি ব্যাটিং করছিলেন দুই তরুণ ইয়াসির আলী রাব্বি ও নাজমুল হোসেন শান্ত। আর পূর্ব দিকের নেটে তখন নকিংয়ে ব্যস্ত অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম।

রাব্বি-শান্তর নেট সেশনে তদারকি করছিলেন ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স ও টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। আর মুশফিকের সঙ্গে কাজ করছিলেন হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। যা দেখে যে কারও মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, তিনজনই কি বাংলাদেশ দলের হেড কোচ?

অবশ্য বর্তমানে তিনজনই হেড কোচ না হলেও, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঠিকই ডোমিঙ্গোর আগে বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন জেমি সিডন্স ও খালেদ মাহমুদ সুজন। ২০০৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত হেড কোচ ছিলেন সিডন্স, ২০১৯ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেছেন সুজন। আর এখন আছেন ডোমিঙ্গো।

যার মানে দাঁড়ায় বাংলাদেশ দলে আছেন এখন তিনজন সাবেক-বর্তমান হেড কোচ। তাদের বর্তমানে পদবি বা দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন হলেও, সবারই আসলে সক্ষমতা রয়েছে দলের হেড কোচ হিসেবে কাজ করার। যা বাংলাদেশের অনুশীলনেও স্পষ্ট প্রতীয়মান। ডোমিঙ্গোর পাশাপাশি সিডন্স-সুজনের কর্ম তৎপরতাও ছিল হেড কোচের মতোই।

দলের মধ্যে পরোক্ষভাবে তিন হেড কোচের এই পরিস্থিতি আসলে কিভাবে দেখছেন আসল হেড কোচ ডোমিঙ্গো? অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এ বিষয়ে কথা বলেছেন টাইগারদের হেড কোচ। তিনি জানিয়েছেন, দলে তাদের সবার দায়িত্ব আলাদা এবং এটির সঙ্গে সবাই নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন।

ডোমিঙ্গোর ভাষ্য, ‘দলে জেমি সিডন্সের দায়িত্ব ব্যাটিং পরামর্শকের, সে তা-ই করছে। আর টিম ডিরেক্টরের পদটি হলো বোর্ডের সঙ্গে আমার সংযোগ সূত্রের মতো। তার মাধ্যমেই আমরা বোর্ডে যোগাযোগ করি। আমার এরই মধ্যে অনেক কাজ আছে। একাদশ লাইনআপ কী হবে, টসের সিদ্ধান্ত কী হবে এসব নিয়ে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলার দিকে তাই মনোযোগ দিতে চাই না। আমার জন্য ভালো যে এসব করার জন্য ‘চাচা’ আছেন। তিনি এসব তথ্যগুলো তাদের জানিয়ে আমার ওপর থেকে চাপ কমান।’

এ সময় ব্যাটিং পরামর্শক সিডন্সের ব্যাপারে ভূয়সি প্রশংসা করেন ডোমিঙ্গো। এমনকি একবাক্যে স্বীকার করে নেন দলের খেলোয়াড়দেরকে তার চেয়ে সিডন্সই ভালো চেনেন। কেননা এর আগেও এখানে কাজ করেছেন এ অস্ট্রেলিয়ান কোচ। যে কারণে সব বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা রয়েছে।

ডোমিঙ্গো বলেন, ‘সিডন্স একজন অভিজ্ঞ কোচ, যার বিশ্বজুড়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সব বিষয়ে তার ভালো ধারণা রয়েছে। সে হয়তো আমার চেয়েও ভালো চেনে খেলোয়াড়দের। সে এখানে আগেও কাজ করেছে। তাকে দলের সঙ্গে পাওয়া আমার জন্য ভালো। আমাদের কোচিং স্টাফে অনেক অভিজ্ঞতা যোগ করেছেন সিডন্স।’

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে নানান বিতর্ক শোনা যাচ্ছে ডোমিঙ্গোর কোচিং নিয়ে। এমনকি গতবছরের শেষ দিকে তাকে বরখাস্ত করে দেওয়ার গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল। এসব মাথায় নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ পুরোটা শেষ করার ব্যাপারে কতটা আত্মবিশ্বাসী এ দক্ষিণ আফ্রিকান?

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বরং বেছে নেন ক‚টনৈতিক কৌশল। সংবাদমাধ্যম কিংবা সাধারণ মানুষের কথাবার্তা কানে নেন না জানিয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আপনারা এটি বিসিবিকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আত্মবিশ্বাসী কোচ না হলে কোনো আন্তর্জাতিক দলের দায়িত্ব পালন করতাম না। আমি রুঢ় হতে চাই না, তবে সংবাদ মাধ্যম অথবা সাধারণ মানুষ কী বলে সেটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আপনারা আমার সম্পর্কে বা আমার দলের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে যা ইচ্ছে লিখতে পারেন। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি যেনো এসব বাইরের আওয়াজ থেকে খেলোয়াড়দের দূরে রাখতে পারি। যদি আমি নিজেই এসব নিয়ে মাথা ঘামাই তাহলে খেলোয়ারদের কাছ থেকে ভিন্ন কিছু আশা করতে পারি না।’

স্ব.বা/ রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *