ভবিষ্যতে কোনো পেসার ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলবে না: অ্যান্ডারসন

খেলাধুলা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক : টি-টোয়েন্টির উত্থানে ক্রিকেটের বাকি দুই সংস্করণ টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেট যে বিপদে তা বহুবার বলেছেন নানাজনে। টি-টোয়েন্টির বাজার বাড়ছে বিদ্যুৎ গতিতে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জনপ্রিয়তার বিস্ফোরণ বলছে একে অনেকে। এই বিফোরনের ‘ধকল’ বয়ে বেড়াতে হবে টেস্ট ক্রিকেটকে -এমন শঙ্কার কথাই জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক জেমস অ্যান্ডারসন।

সম্প্রতি জাতীয় দলের চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। পরিবারকে সময় দেওয়া ও বেশি বেশি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই ৩৩ বছর বয়সী বোলার। সামনের দিনে এমন সিদ্ধান্ত আরও বেশি বেশি দেখা যাবে বলে মত ৪০ ছাড়ানো অ্যান্ডারসন। তার শঙ্কা, ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার লোভে টেস্ট ক্রিকেট ট্রেন্ট বোল্টের মতো বোলার হারাতে পারে।

অফস্পিনার মুত্তিয়াহ মুরালিধরন ও প্রয়াত লেগস্পিনার শেন ওয়ার্নের পর টেস্টে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ইংলিশ পেসার জিমি অ্যান্ডারসন। তবো।ক্রিকেটের এই এলিট সংস্করণে পেসারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি উইকেট নেই আর কারও। ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকের পর গত দুই দশকে ১৭২ টেস্ট খেলে ৬৫৭ উইকেট নিয়েছেন ‘বার্নলি লারা’ খ্যাত জিমি। গত জুলাইয়েই ৪০ পার করা এই পেসার মনে করেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই রমরমা বাজারে ভবিষ্যতে এই বয়সে আর কোন পেসারকে টেস্ট খেলতে দেখা যাবে না।

৪০ বছর ১৭ দিন বয়সী অ্যান্ডারসন বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) থেকে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লর্ডস টেস্টেও খেলছেন। মাঠে নামার আগে এই ইংলিশ কিংবদন্তি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘হয়তো ব্রড খেলবে (৪০ বছর বয়স পর্যন্ত টেস্ট) কিন্তু তারপর অবশ্যই দেখা যাবে না। কারণ, এমন বোকামি কেউ করবে না। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এখন তো কতকিছুই হচ্ছে। হানড্রেড আছে, খেলাটির সংক্ষিপ্ত সংস্করণগুলোর একটি। এত দীর্ঘ সময় ধরে কেউ টেস্ট ক্রিকেট খেলবে বলে আমার মনে হয় না।’

যদিও বোর্ডের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কারতন হিসেবে বোল্ট বলেছেন পরিবারকে সময় দেওয়া ও ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশি মনোনিবেশ করার কথা, তবে এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করেন এই ইংলিশ কিংবদন্তি। তিনি বলেন, এই ধরণের সিদ্ধান্ত আরও আসবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে প্রচুর বিনিয়োগ হচ্ছে, বাড়ছে টূর্নামেন্টের সংখ্যাও। তাই যেকোন ক্রিকেটার এখন ভাবতে পারে বোল্টের পদাঙ্ক অনুসরণ করে টেস্ট বাদ দিয়ে এসব টুর্নামেন্টে খেলার বিষয়ে।

জিমি বলেন, ‘এটা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সে (বোল্ট) আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় তারকা এবং আমি দেখতে পাচ্ছি, এমনটা আরও বেশি হবে, বিশেষ করে বোলারদের ক্ষেত্রে। আমার মনে হয় ব্রডও একমত হবে যে, ২০১৫ বিশ্বকাপের পর সাদা বলের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ায় আমরা ভাগ্যবান। আমরা লাল বলের ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে পেরেছি। তবে ভবিষ্যতে এর বিপরীত ঘটবে বলেই বলেই অনুমান, খেলোয়াড়েরা নিজেদের পছন্দের সংস্করণ ও সফর বেছে নেবে।’

ক্যারিয়ার সায়াহ্নে থাকা এই পেসার মনে করেন, এমনটা হলে তা টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে না। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটকে এর ধকল বইতে হবে। চার ওভার বল করা একজন বোলারের জন্য কোন বিষয়ই না। কিংবা ২০ বল। এতে কিছুই হয় না। আর পারিশ্রমকটা যেহেতু ভালো, ক্রিকেটাররা ঝুঁকবেই।’

তবে অ্যান্ডারসন নিজেকে এই তালিকায় ভাবছেন না। তার কাছে সবার উপরে টেস্ট ক্রিকেট। ফিট থাকলে এই সংস্করণে খেলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট এখনো সংস্করণগুলোর মধ্যে শীর্ষে, ফিট থাকলে মাঠে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করি। এটা অসাধারণ এক খেলা। আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেটের ওপরে কিছু নেই। তাই যতদিন সম্ভব খেলে যেতে চাই।’

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *