দাপুটে জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

খেলাধুলা

স্পোর্টস ডেস্ক: ত্রিদেশীয় টি ২০ সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচেও জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেই জয়ে ছিল না কোনো গৌরব, ছিল হার এড়ানোর স্বস্তি।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মেলেনি সেই স্বস্তিও। ২৫ রানের হার নাড়িয়ে দিয়েছিল দলের আত্মবিশ্বাস। দুঃসময়ের ঘেরাটোপ থেকে মুক্তি পেতে দরকার ছিল ঝলমলে একটি জয়।

সিরিজের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে আরাধ্য সেই দাপুটে জয়ের দেখা পেলেন সাকিব আল হাসানরা। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখে ফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেল স্বাগতিকদের।

বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়েকে একরকম উড়িয়েই দিয়েছে বাংলাদেশ। ৩৯ রানের অনায়াস জয়ে জিম্বাবুয়ের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে আফগানিস্তানকে নিয়ে ফাইনালে উঠে গেলেন সাকিবরা।

২৪ সেপ্টেম্বর মিরপুরে শিরোপাযুদ্ধে নামার আগে শনিবার চট্টগ্রামে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে আরেকবার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। অন্যদিকে টানা তিন হারে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে আগামীকাল সান্ত্বনার জয়ের খোঁজে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে।

মাহমুদউল্লাহর ৪১ বলে ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে কাল সাত উইকেটে ১৭৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৪৪ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যাওয়া জিম্বাবুয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ বলে ১৩৬ রানে অলআউট হয়। শেষদিকে রিসমন্ড মুতুম্বামির ঝড়ো ফিফটি (৩২ বলে ৫৪) হারের ব্যবধানই শুধু কমিয়েছে।

এছাড়া ২০ বলে ২৭ রান করেন জার্ভিস। বাংলাদেশের হয়ে আলোকিত অভিষেকে মাত্র ১৮ রানে দুই উইকেট নেন লেগ-স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। ৩৬ রানে তিন উইকেট নিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তন রাঙিয়েছেন অভিজ্ঞ পেসার শফিউল ইসলাম।

শেষ ওভারে দুই উইকেট নেয়া মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি ২০ তে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও সাকিব নিয়েছেন একটি করে উইকেট। শুরুতে সাইফ ও সাকিব কাঁপিয়ে দেন জিম্বাবুয়েকে। এরপর তাদের চেপে ধরেন আমিনুল ও শফিউল।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল আগের দু’ম্যাচের চেয়ে ঢের ভালো। উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৪৯ রান। তাতে লিটন দাসের অবদানই সিংহভাগ। লিটনের সঙ্গে কাল ওপেন করতে নেমেছিলেন আন্তর্জাতিক টি ২০ তে অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্ত।

লিটন একপ্রান্তে ঝড় তুললেও অন্যপ্রান্তে টিকতে পারেননি নাজমুল। নয় বলে ১১ রান করে পঞ্চম ওভারে বিদায় নেন তিনি। পরের ওভারে আউট ২২ বলে ৩৮ রান করা লিটন। অষ্টম ওভারে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও ধরেন সাজঘরের পথ। ৬৫ রানে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এবার আর কক্ষচ্যুত হতে দেননি মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম।

চতুর্থ উইকেটে তাদের ৫৫ বলে ৭৮ রানের জুটির সুবাদেই ১৭৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত। কিন্তু দ্রুত চার উইকেট হারানোয় শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ৪১ রান তুলতে পারে স্বাগতিকরা। ২৬ বলে ৩২ রান করে মুশফিক বিদায় নেন ১৭তম ওভারে। আফিফ হোসেনও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।

তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। আন্তর্জাতিক টি ২০ তে ২৪ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেলেন তিনি। এক চার ও পাঁচ ছক্কায় ৪১ বলে সর্বোচ্চ ৬২ রান আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে।

শেষ ওভারে টানা দুই বলে মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেককে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের সফলতম বোলার কাইল জার্ভিস (৩/৩২)। কিন্তু মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তা হতে দেননি। ছক্কা মেরে ইনিংসের সমাপ্তি টানেন সাইফ।

এ ম্যাচে একাদশে তিনটি পরিবর্তন এনে মাঠে নামে বাংলাদেশ। অভিষেক হয়েছে নাজমুল ও লেগ-স্পিনিং অলরাউন্ডার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের। এছাড়া স্পিনার তাইজুলকে বসিয়ে খেলানো হয়েছে পেসার শফিউল ইসলামকে।

বাংলাদেশ ১৭৫/৭, ২০

জিম্বাবুয়ে ১৩৬/১০, ২০

ফল : বাংলাদেশ ৩৯ রানে জয়ী

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *