ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে মানুষ: ফখরুল

রাজনীতি

স্বদেশবাণী ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণবিরোধী নীতির কারণে সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় দেশে নৈরাজ্য ভয়ালরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশের মানুষ এখন জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে।

রোববার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার নানা ‘বায়োস্কোপ’ প্রদর্শন করে তাদের অমানবিকতার বলি করছে দেশের নানা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে। গত বুধবার সকালে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনায় উৎকণ্ঠা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দেশের বিভিন্ন স্থানে হতাহতের ঘটনাসহ দেশব্যাপী রক্তাক্ত সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরঞ্জিত শক্তি প্রয়োগের কারণে জীবনহানি ও গুরুতর আহতসহ দেশের বিভিন্ন জনপদ রক্তরঞ্জিত হচ্ছে। কুমিল্লার ঘটনা কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলাধীন বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুরসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় যতন সাহা নামে একজন ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনার জের ধরে চাঁদপুরের হজিগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, হামলার চেষ্টাসহ নানাবিধ সংঘাত-সংঘর্ষ ও পুলিশি আক্রমণে বিক্ষুব্ধ মানুষের ওপর লাঠিপেটা, গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ এবং বর্বরোচিত আক্রমণে হতাহতের ঘটনা শুধু নির্দয় আচরণই নয়, এটি কাপুরুষোচিত।

‘এই অরাজকতা সৃষ্টিকারীরা বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্যকে ম্লান করল।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের উপাসনালয় ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে কক্সবাজারের রামু-উখিয়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, বি-বাড়িয়া, ফরিদপুর, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে আক্রমণ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি, সহায়-সম্পত্তি আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই দুষ্কৃতকারীরা প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক।

তিনি বলেন, কুমিল্লার সাধারণ মানুষের মতো আমরাও একমত যে, পুলিশ বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিলে নানুয়া দীঘির পাড়ের মণ্ডপের ঘটনাটি নির্মম অমানবিকতার দিকে গড়াত না।

অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের নীতি আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *