বাঘা(রাজশাহী) প্রতিনিধি: বাঘা উপজেলায় খাদ্য গুদামে মাষ্টাররোলে কর্মরত পরিচ্ছন্ন কর্মীকে সরিয়ে তার পদ দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ওসি এলএসডি, টিসিএফ,(বাঘা) ডিসি ফুড ও আরসি ফুড,রাজশাহীকে অবগত করে বাঘা থানায় অভিযোগ করেছেন ডাবলু হোসেন। গত (২৬ আগস্ট) দুপুরে আব্দুল হালিম নামে আগের পরিচ্ছন্ন কর্মী তার লোকজন নিয়ে ডাবলু হোসেনকে বের করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আগের পরিচ্ছন্ন কর্মী আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি চাল কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তালিকায় নাম রয়েছে। এ মামলা দায়েরের পরে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে উপজেলা খাদ্য গুদামে দুই বছর কর্মরত ডাবলু হোসেন(৩০)।
জানা যায়,গত ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের ১৫তারিখে বাঘা উপজেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় সরকারি খাদ্য গোডাউন হইতে অবৈধভাবে সরকারি চাল কালোবাজারি মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য পাশ্ববর্তী চারঘাট উপজেলার কাঁকড়ামারী বাজারে অবস্থিত “বিলাল খাদ্য ভান্ডার’’ নামে এক আড়তে মজুত রাখে। গোপন সংবাদ সূত্রে বাঘা থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই “বিল্লাল খাদ্য ভান্ডার’’ আড়ত থেকে ২১টন ২০০শ’ কেজি চাল জব্দ করে। জব্দকৃত চালগুলো একটি ট্রাকে (ঢাকা মেট্টো ট-১৪-৭৫৭৫) বহন করছিল।
এ বিষয়ে বাঘা থানার সহকারি পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) নূরল আফসার বাদি হয়ে ধৃত আসামী চারঘাট উপজেলার মেরামতপুর গ্রামের মোস্তাকিন আলী(৫৫),মোবারক হোসেন(২৫), শমছের আলী (৬০) সহ বাঘা সরকারি খাদ্য গুদামের খন্ডকালীন পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসাবে কর্মরত চক ছাতারি গ্রামের আব্দুল হালিম(৪০) (পিতা বদিউজ্জামান)কে পলাতক আসামী হিসাবে অজ্ঞাত আরোও কয়েকজনকে আসামী করে মামলা করেন। (মামলা ১৪ তারিখ ১৫-০৪-২০২২)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে বাঘা সরকারি খাদ্য গোডাউন হতে জব্দকৃত চালগুলো অসৎ উপায়ে সংগ্রহ করে, বাজারজাত করার উদ্দেশ্য জব্দকৃত ট্রাকের মাধ্যমে আসামী শমশের মালিকানা ”বিল্লাল খাদ্য ভান্ডারে” নিয়ে সরকারি চালের বস্তার মোড়ক পরিবর্তন করে নূরজাহান মার্কা প্লাষ্টিকের বস্তায় ভর্তি করে দীর্ঘদিন রেখে বিক্রি করত। শমশের আলীর স্বীকার উক্তি মতে চালগুলো মোস্তাকিন আলীর নিকট থেকে ক্রয় করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করতেন।
এ বিষয়ে মামলা দায়ের পর অভিযুক্ত আব্দুল হালিমের পরিবর্তে উপজেলার চক ছাতারি গ্রামের সাইদার রহমানের ছেলে ডাবলু হোসেন খাদ্য গুদামের ঝাড়–দার পদে খন্ডকালিন (মাস্টাররোলে) কর্মরত। ছাত্র-জনতার অন্দোলনে দেশের পট পরিবর্তনের পর ডাবলুকে সরিয়ে আগের কর্মস্থলে যোগ দেন আব্দুল হালিম।
ডাবলু হোসেন জানান, ওসি এলএসডি তাকে রেজিষ্টার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেন নাই। গুদাম ঘরের যে পরিত্যক্ত বাসায় দুই বছর থাকতেন,ওসি এলএসডি (বাঘা) জবিউর রহমান সে বাসায় থাকতে নিষেধ করেছেন। এমতবস্থায় তার জীবন-জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আব্দুল হালিম বলেন, ২০ বছর ধরে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলাম। কৌশলে তার নামে মামলা করা হয়। মামলার পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ডিও লেটার দিয়ে কাজ করছিলেন ডাবলু হোসেন। তার দাবি মামলা চলমান থাকলেও জামিনে মুক্ত আছেন। পরে কাজে যোগ দিয়েছেন।
খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) জবিউর রহমান বলেন, মামলার কারণে আব্দুল হালিমের কাজ বন্ধ ছিল। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক (ফুড অফিসার) এর নির্দেশনায় বর্তমানে আগের পরিচ্ছন্ন কর্মী আব্দুল হালিম কাজ করছেন। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ইয়াছিন আলী জানান, ওসি এলএসডি যাকে দিয়ে ভালো মনে করবেন,তাকে দিয়ে কাজ করাবেন। কিন্তু ছোট্র বিষয়টি নিয়ে দু’জনের পক্ষ থেকেই স্থানীয় বিএনপি নেতাদের তদবির রয়েছে। তবে বর্তমানে আব্দুল হালিম কাজ করছে বলে জানান তিনি।