দেশকে মেধাশুন্য ও পরনির্ভরশীল করতেই পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে: মাওলানা ড. কেরামত আলী

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরীর আমীর মাওলানা ড. কেরামত আলী বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধিজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। অথচ মহান বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে ১৪ই ডিসেম্বর জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে। মুলত দেশকে মেধাশুন্য ও পরনির্ভরশীল করতেই পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যথাযথ মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং শহীদদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে আজ ১৪ ডিসেম্বর শনিবার নগরীর জিয়া পার্কে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

রাজশাহী মহানগরীর নায়েবে আমীর এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে এবং রাজশাহী মহানগরীর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, রাজশাহী জেলা সেক্রেটারি গোলাম মুর্তজা, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইন, সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক সারওয়ার জাহান প্রিন্স, সিরাজুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, আশরাফুল আলম ইমন, সালাহউদ্দিন আহমেদ সহ রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

মাওলানা ড. কেরামত আলী বলেন, স্বাধীনতার মাত্র ২ দিন পূর্বে ঢাকা ছিল অবরুদ্ধ। নিয়ন্ত্রন ছিল স্বাধীনতাকামীদের হাতে। সেই সময় মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে। যেসব বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীন দেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে ভূমিকা রাখবে। নবগঠিত এই রাষ্ট্র যেন করদ রাজ্যে পরিণত করা যায়, এই পরিকল্পনা ও চিন্তা থেকে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।

এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম বলেন, স্বাধীনতার ২ দিন পূর্বে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। ১৬ই ডিসেম্বরের পরও হত্যাকান্ড হয়েছে। তখনতো পাকিস্তানী বাহিনী ছিল না। কোন শক্তি সেই হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল? তার জন্য কী পাকিস্তানী বাহিনীকে দায়ি করতে পারি? তার পিছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাও দায়ি থাকতে পারে। এটা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। এটা বের করার দায়িত্ব ছিল স্বাধীনতা পরিবর্তী যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের। কিন্তু তারা তা করেননি।

ইমাজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, বুদ্ধিজীবী তারাই যারা জনগণ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করে। রাষ্ট্রীয় অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়। দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের পর যারা জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিতে চায়নি, তারাই এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের নেপথ্যের শক্তি।

গোলাম মুর্তজা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হারের অন্তর্ধান এখনও রহস্যাবৃত। তার কী পরিণতি হয়েছে এখনও পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মূলত জহির রায়হান বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলেই রহস্য প্রকাশ হওয়ার আগেই তাকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়েছে।
জসিম উদ্দিন সরকার।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *