আদানি চুক্তি মেনে বিদ্যুৎ দিলে বাংলাদেশের সাশ্রয় হতো ২৮.৬ মিলিয়ন ডলার

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগ, ভারত সরকারের কাছ থেকে পাওয়া কর ছাড় সুবিধার কথা গোপন রেখে দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কোম্পানি আদানি পাওয়ার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। খবর রয়টার্সের।

পিডিবি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, আদানির কর সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে’ বাংলাদেশকে জানানোর কথা থাকলেও তা করেনি।

কোম্পানিটি ভারতে যে কর ছাড় পেয়েছে, সেই অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম ধরা হলে বাংলাদেশের ২৮.৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হওয়ার কথা।

এ নিয়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, এই সাশ্রয়ের বিষয়টিই ভবিষ্যত আদানি পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে।

ধনকুবের গৌতম আদানির এই কোম্পানি ভারতের পূর্বাঞ্চলে ঝাড়খণ্ডের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।

রয়টার্স জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নথিপত্র এবং দুপক্ষের চিঠি চালাচালি এবং পিডিবির ছয় কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার পর্যালোচনা করেছে।

সংবাদ সংস্থাটি জানায়, কোনো ধরনের দরপত্র প্রক্রিয়া ছাড়াই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে চুক্তি করেছিলেন, তার ব্যয় কয়লা বিদ্যুতের অন্যান্য চুক্তির তুলনায় অনেক বেশি। ওই চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনার বিষয়ে এখন আশাবাদী বাংলাদেশ।

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে বলেন, আদানির সরবরাহ ছাড়াই বাংলাদেশের এখন যথেষ্ট উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে, যদিও সব দেশীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু নেই।

ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন। তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের ‘কণ্ঠরোধ’ এবং অর্থনৈতিক ‘অব্যবস্থাপনার’ অভিযোগ উঠেছে।

শেখ হাসিনা গত দুই দশকের বেশির ভাগ সময় বাংলাদেশ শাসন করেছেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র’ ছিলেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তার ক্ষমতাচ্যুতির পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শাসনভার নিয়েছে।

কর ছাড় নিয়ে আদানি যে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, সেই বিষয়টি প্রথম সামনে আনে রয়টার্স। ২৫ বছরের ওই বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা সম্পর্কেও বিশদ তথ্য প্রকাশ করার কথা জানিয়ে বার্তা সংস্থাটি লিখেছে, গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে ২৬ কোটি ডলার ঘুস দেওয়ার মামলায় আদানি ও তার সাত নির্বাহীকে অভিযুক্ত করার ঘটনা তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের করা চুক্তি পর্যালোচনায় চাপ তৈরি করতে পারে।

তবে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা চুক্তির সব বাধ্যবাধকতা ‘রক্ষা’ করেছেন এবং ঢাকা চুক্তি পর্যালোচনা করছে এমন কোনো ইঙ্গিত তারা পাননি।

এছাড়া কর সুবিধা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ যেসব অভিযোগ তুলেছে, তার উত্তর দেয়নি আদানি গ্রুপ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে তারা ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছে।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *