ধাক্কাধাক্কি করে বের করে দেওয়ার দাবি প্রধান শিক্ষকের, ইউএনওর কাছে নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ শিক্ষক-কর্মচারীদের

রাজশাহী

বাঘা(রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনাসহ নিয়োগ বাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন,এমএইচ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তারা। এর আগে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারি শিক্ষকদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষককে বের করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে সহকারি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার (২০ জানুয়ারী) ঘটনাটি ঘটেছে ,রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের এমএইচ (মহদীপুর-হেলালপুর) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ বলেন, দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষক নিয়ম বর্হিভ’তভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। এছাড়াও টাকা নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারিকে নিয়োগ দেন প্রধান শিক্ষক। সেখানে ২৪ লক্ষ টাকার বাণিজ্য হয়েছে। সেই টাকায় বিদ্যালয়ের উন্নয়নের দাবি করেন সহকারী শিক্ষকরা। তাদের দাবি, প্রধান শিক্ষক রাজি না হলে সহকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে বাক বিতন্ডা ও ধাক্কা ধাক্কির ঘটনা ঘটে। জাকির হোসেন আরোও বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজে আমাকে মারপিট করেছে।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে-বিভিন্নজন মন্তব্যে লিখেছেন। আজিবর রহমান লিখেছেন, লজ্জা জনক অধ্যায়। তুহিন ইসলাম লিখেছেন, যারা টাকা দিয়ে চাকরি নিয়েছে তারাও দোষী, আর যারা টাকা নিয়ে মুর্খদের চাকরি দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট করেছে তারা আরো বড় দোষী। এই ঘুষ বাণিজ্যের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বাদ(ব্যান) করা উচিৎ। হাসান জামান অপু লিখেছেন, ধিক্কার জানাই। ফারুক হোসেন লিখেছেন, এরকম শিক্ষক জাতির শত্রু। রফিকুল ইসলাম লিখেছেন, এরা শিক্ষক নামে কলঙ্ক। লিটন হোসেন লিখেছেন, কি হচ্ছে দেশে এগুলো শিক্ষার কি অবস্থা। আকাশ সরকার লিখেছেন, শিক্ষা ও আজ ধংসের মুখে। মো. মারুফ লিখেছেন, এরকম করাই উচিত, কারণ এর আচার ব্যবহার কোন কিছুই ভালো না, এটা একটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক, এটার কোন গুনি নাই, এর ভিতর আর মুখের ভাষা তো অত্যন্ত খারাপ, আর সে নিয়োগের টাকা গুলো সব একাই খেয়ে নিয়েছে, এটার হিসাব চাইলে ওর মাথা গরম, আর সকল ছাত্র-ছাত্রী বা সহকারী সকলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, এক কথায় স্কুলটাকে সে শেষ করে দিয়েছে, তার এই স্কুল থেকে পদত্যাগ হওয়াটাই ভালো, তাহলে গ্রামের মানুষ এবং গ্রামের স্কুলটা ভালো থাকবে।

প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক বলেন, সোমবার শিক্ষক-কর্মচারী একত্রিত হয়ে আমার গায়ে হাত দেয় এবং লাঞ্চিত করে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে। তার দাবি, ওই ঘটনায় মুখের দাড়িও ছিঁড়ে গেছে।
তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল-নৈশ প্রহরি আসাদুল ইসলাম ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী আবু জারকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে সময় আওয়ামীলীগের লোকজনই তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন সহকারী শিক্ষকরা অযৌক্তিকভাবে সেই টাকার দাবি করে উন্নয়নের কথা বলছেন। তাদের দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব না হলে তারা সবাই একত্রিত হয়ে তার সাথে খারাপ আচরণ করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, মঙ্গলবার( ২১ জানুয়ারী) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য ও অনিয়ম এবং দূনীতির বিষয়ে ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *