প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ৫ই মে শাপলা গণহত্যার প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানবপ্রাচীর করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সোমবার (৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে সংগঠনটির রাজশাহী মহানগর শাখার উদ্যোগে মানবপ্রাচীর অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া। ছাত্রশিবির রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি মোহা: শামীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে, সঞ্চালনা করেন ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগর শাখার দপ্তর সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন।
মানবপ্রাচীরে আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবির রাজশাহী মহানগর শাখার সেক্রেটারি ইমরান নাজির, মাদ্রাসা ও দাওয়া সম্পাদক শাইনুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক রুবেল আহমেদসহ বিভিন্ন বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের বিপ্লব হয়েছে গত বছরেরর ৫ আগস্ট। বিপ্লব পরবর্তী বিপ্লব পরবর্তী নয় মাস পার হয়ে গেলেও এখনো খুনিদের কোন বিচার হয়নি। ২০১৩ সালের নাস্তিক ব্লগার কর্তৃক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কটুক্তি করার প্রতিবাদে শাপলা চত্বরে তৌহিদী জনতা সমাবেশের আয়োজন করে। শাহবাগী ও নাস্তিক ব্লগাররা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আম্মাজান আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহাকে নিয়ে কটুক্তি করার প্রতিবাদে নবী প্রেমী মুসল্লীরা তাদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। যে সমাবেশ কর্মসূচি পতিতো স্বৈরাচার খুনী হাসিনা সহ্য করতে না পেরে ইসলাম প্রেমী মুসল্লিদের ওপর দিনের বেলায় আক্রমণ করে ১১ জন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীকে শহীদ করেন।
তিনি বলেন, রাতের বেলায় যখন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা সারাদিনের কর্মসূচি শেষ করে বিশ্রাম করছিলেন ঘুমাচ্ছিলেন কেউ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ছিলেন সেই সময় স্বৈরাচার খুনি হাসিনার পেটুয়া পুলিশ বাহিনী র্যাব বিজিবি বাহিনী দিয়ে তাদের ওপর নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে শত শত ভাইদের খুন করেন। শত শত মানুষ হত্যা করার পরেও নির্লজ্জ শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে নেককারজনক বক্তব্য দিয়েছিল ধর্মপ্রাণ মুসলমান নাকি গায়ের রং মেখে শুয়েছিল। এখানেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। তারা পরবর্তীতে অসংখ্য গান অত্যাচারে এসে সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪-এ এসে তাদের এই গণহত্যা শেষ হয়।
আসাদুজ্জামান ভূইয়া আরও বলেন, এখন পর্যন্ত জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও শাপলা চত্বরে এখন খুনির বিচারের ব্যাপারে সরকার কর্তৃক কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত সরকার কর্তৃক কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি যা দ্বারা শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিচার ত্বরান্বিত হতে পারে। আমরা বর্তমান সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শাপলা চত্বরে গণহত্যার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং শাপলা চত্বরে গণতন্ত্রের বিচার কার্যকর করার জন্য অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা এ খুনের সাথে জড়িত তাদের নামে মামলা করে বিচারের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যারা এই খুনের সাথে জড়িত ছিল সে সকল আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের এখন আমরা প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি গতকালকে গাজীপুরে জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লার উপর হামলা করা হয়েছে। বলে দিতে চাই এখনো কিভাবে আওয়ামী দোসরা প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে পারে কিভাবে তারা প্রকাশ্যে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে এখনো কেন তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই অতি দ্রুত এই সকল বিচারের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পুরস্কার দেওয়া দরকার নাই। যারা ৫ এ মেয়ে শাপলা চত্বরে গণহত্যা থেকে শুরু করে ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের গণহত্যা চালিয়েছে সেই আওয়ামী স্বৈরাচার কে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা আজকের এই মানব প্রাচীর সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেক কাজ করলেও খুনিদের বিচারের তেমন কোন কাজ করেনি তারা ইসলামের জন্য কোন কাজ করেনি পক্ষান্তরে নারী কমিশনের নামে নোংরা একটি ইসলামবিরোধী নারী কমিশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাশ করার চেষ্টা করেছে যার মধ্যে সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী আইন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
সর্বশেষ তিনি সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ছাত্র-জনতা ও তৌহিদী জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন সতর্ক থাকুন এবং আগামী স্বৈরাচার সন্ত্রাসদের দাবিতে কর্মসূচি পালন করুন।