জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী গণফোরামের দুই নেতার একজন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বৃহস্পতিবার শপথ নিচ্ছেন। বেলা সাড়ে ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথ পড়াবেন।
একই সময় গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোকাব্বির খানের শপথ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহুর্তে তিনি পিছুটান দিয়েছেন।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কি কারণে শপথ নেয়া থেকে পিছুটান দিলেন মোকাব্বির খান- তা জানা যায়নি।
তবে গণফোরামের একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই আপাতত শপথ নিচ্ছেন না মোকাব্বির খান।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে নাম লিখিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনে ভোট করে জয়ী হন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।
আর দীর্ঘদিন ধরে লন্ডন প্রবাসী মোকাব্বির খান গণফোরামের দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে জয়ী হন। ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী না থাকায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। এই নির্বাচনে বাকী এর বাইরে মাত্র ছয়টি আসনে জয় পায় বিএনপি।
নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ তুলে পুনঃনির্বাচনের দাবি তুলেছে তারা। দলটির নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন শুরুতে তার দলের দুই নেতার শপথের বিষয়টিকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখলেও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সুর বদলায়।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খান শপথ নিলে তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে গণফোরাম।
দলের এ অবস্থান এবং দলের হুশিয়ারি সত্ত্বেও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খান শপথ নেয়ার সিদ্বান্ত নেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে আলাদা আলাদাভাবে চিঠি দিয়ে শপথ নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তারা। সে অনুযায়ী শপথ গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্নও করে সংসদ সচিবালয়।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় স্পিকারের কার্যালয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খানের শপথ নেয়ার কথা।
কিন্তু বুধবার রাতে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু স্বাক্ষরিতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মোকাব্বির খান শপথ নিচ্ছেন না। তবে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ যথারীতি শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, এর আগে বিকালে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে বৈঠক করেন দলটির নেতারা। এই বৈঠকে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথের সিদ্ধান্ত নেয়া দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যায়- তা ঠিক হয়।
এ সময় সিদ্ধান্ত হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খান শপথ নিলে দলীয় এবং আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেবে গণফোরাম। বিষয়টি স্পিকারকেও লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।
সূত্র জানায়, দলের এই সিদ্ধান্তের পরপরই সুর বদলাম মোকাব্বির খান। আপাতত শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপরপরই বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করেন মোস্তফা মহসিন মন্টু।
জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘মোকাব্বির খান শপথ নিচ্ছেন না। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ শপথ নিলে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধেব্যবস্থা নেব। দলীয় সিদ্ধান্ত এবং আইনগত সিদ্ধান্ত যা নেয়া দরকার, সেগুলো আমরা নেব’।