স্বদেশবাণী ডেস্ক: ভারত উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে যে ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা দিয়েছে তা নিয়ে নানা ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারত থেকে যে টিকা এসেছে তা বাংলাদেশের মানুষের ওপর গবেষণা চালানোর জন্য।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁও অঞ্চলের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ভারতের গবেষণাগারের ‘ব্যাঙ, বিড়াল, তেলাপোকায় পরিণত হয়েছে। ভারত তিস্তার পানি তো দেয় না, কিন্তু উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দিল। এই দরদ উতলে ওঠার কারণ কী? ভারত মূলত বাংলাদেশের মানুষদের ওপর ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাতে চায়। বাংলাদেশ সরকার ভারতকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে। কারণ ভোটারবিহীন বর্তমান মিডনাইট সরকারের দেশের মানুষের বাঁচা-মরা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ভারত থেকে যে টিকা এসেছে, তা বাংলাদেশের মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর জন্য এসেছে। ওরা (ভারত) দেখবে এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে মানুষ বাঁচে, না মরে, না অসুস্থ হয়। তারপর ভিআইপিরা নেবে। তারপরে ভারত নেবে। ভারত বলছে, তারা মার্চে এটার ট্রায়াল করবে।’
রিজভী আরো বলেন, ‘কত বড় বিপজ্জনক ও সর্বনাশা খেলায় মেতেছে সরকার। বাংলাদেশের মানুষ অন্য দেশের গবেষণাগারের প্রাণী হিসেবে কাজ করবে? বাংলাদেশের মানুষ তেলাপোকায় পরিণত হয়েছে। গবেষণাগারে যেমন তেলাপোকাকে পরীক্ষা করা হয়, তেমনি বাংলাদেশের মানুষের উপর টিকা দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যাতে আমরা তেলাপোকায় পরিণত না হই। সরকার নিজে ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রভুরা যা বলছে তাই করছে। কই আমাদের তিস্তার পানি তো দেয় না। ২০ লাখ ডোজ দিল, তাদের দরদ এত উথলে গেছে? তিস্তায় পানি দেয় না, ভালো বন্ধু হলে তো দিতেন।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সরকার আরেকটি ভানুমতির খেল দেখাচ্ছে। সেটা হচ্ছে ভ্যাকসিন নিয়ে। ২০ লাখ লোককে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেবে। ভারত থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছে। ভারতের হাইকমিশন বলছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই ভারতের বড় বন্ধু, অন্য কেউ না। যারা একটি দেশের একটি রাজনৈতিক দলকে বন্ধু মনে করে, তাদের দেওয়া ভ্যাকসিন যদি দেশের জনগণ নেয়, তাহলে মানুষ বাঁচবে কি বাঁচবে না, সেই গ্যারান্টি নাই।’
রিজভী আরো বলেন, ‘সরকার বারবার বলছে ভ্যাকসিন ভিআইপিদের আগে দেওয়া হবে না। আগে দেওয়া হবে সাধারণ জনগণকে। প্রশ্ন হলো, ভিআইপিদের আগে দেওয়া হবে না কেন? আগে ভিআইপিদের দিন, তারা সুস্থ থাকুক, তারপর দেশের জনগণকে দিন। কিন্তু এখানেই রহস্য, সরকার সাধারণ জনগণকে আগে ভ্যাকসিন দিয়ে এর কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করতে চায়। কারণ, দেশের মানুষের বাঁচা-মরা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যারা ভ্যাকসিন নেবে, তাদের একটি সম্মতিপত্র স্বাক্ষর করতে হবে। সেই সম্মতিপত্রে নিজের নাম, বাবা-মায়ের নাম-ঠিকানা থাকবে। বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন নিয়ে যদি কেউ অসুস্থ হয় বা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তাহলে সরকার দেখবে। এখানেই তো সন্দেহ ঢুকে গেল। এই যে সম্মতিপত্র, অঙ্গীকারনামা—এটা কেন? বিজ্ঞানের পরীক্ষায় যদি উত্তীর্ণ হয় যে এই টিকা সাধারণ মানুষকে দেওয়া যাবে, তাহলে অঙ্গীকারনামা কেন? এই যে অঙ্গীকারনামা, সম্মতিপত্র, এর থেকে প্রমাণিত হয়, ভারত থেকে যে টিকা আসছে তার মধ্যে সন্দেহ আছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ আগে টিকা নেবেন না। আগে দেওয়া হবে গরিব, সাধারণ জনগণকে।’
স্ব:বা/না