বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেলিম হোসেনকে (২৫) সিরিঞ্জের মাধ্যমে চেতনানাশক পুশ করে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ব্যবসায়িক পার্টনার সাদ্দাম হোসেন (২৬) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ক্লিনিক ব্যবসায় মালিকানা নিয়ে বিরোধ ও পাওনা বঞ্চিত করার ক্ষোভে তিনি তাকে পরিকল্পিতভাবে শরীরে চেতনানাশক প্রয়োগে হত্যার কথা বলেছেন। পরে তাকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার এসআই শামীম এ তথ্য দিয়েছেন।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, বগুড়া সদরের পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকের মালিকানা নিয়ে অংশীদার কাম-নার্স সাদ্দাম হোসেনের সাথে পার্টনার শাহিন আলম ও তার ভাই সেলিম হোসেনের (ম্যানেজার) বিরোধ সৃষ্টি হয়।
প্রায় দুই মাস আগে শাহিন আলমকে চেতনানাশক পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠে। কোনো প্রমাণ না থাকায় ঘটনাটি চাপা পড়ে যায়। সাদ্দাম হোসেন গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের জিন্নাহ মিয়ার ছেলে। নিহত সেলিম একই উপজেলার আটবাড়িয়া গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্লিনিকে থাকা অবস্থায় সেলিম অসুস্থতা বোধ করেন। তখন সাদ্দাম হোসেন জানান, তার (সেলিম) উচ্চ রক্তচাপ আছে; হাসপাতালে নেওয়া দরকার। সেলিমকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের চতুর্থতলায় মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। রাত ১২টা ৫ মিনিটে সাদ্দাম হোসেন হাসপাতালে সেলিমকে দেখতে যান।
এ সময় তার শরীরে স্যালাইন চলছিল। সবাই ব্যস্ত থাকার সুযোগে সাদ্দাম হোসেন তার পকেট থেকে ইঞ্জেকশন বের করে সেলিমের হাতে লাগানোর ক্যানুলা দিয়ে পুশ করেন। কিসের ইঞ্জেকশন দেওয়া হলো জানতে চাইলে সাদ্দাম জানান, গ্যাসের ইঞ্জেকশন পুশ করা হয়েছে। সে অ্যাম্পুলের লেবেল ছিঁড়ে ফেলে ও হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করে।
এর ১০ মিনিটের মধ্যেই সেলিম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তখন কর্তব্যরত নার্স ও অন্যরা সাদ্দাম হোসেনকে চেতনানাশক ইঞ্জেকশনের অ্যাম্পুলসহ আটক করে পুলিশে দেন।
এ ব্যাপারে নিহতের ভাই আবদুস সামাদ সদর থানায় সাদ্দামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম হোসেন হত্যার দায় স্বীকার করেন। ক্লিনিকের পাওনা ঠিকমতো না দেওয়ার ক্ষোভ থেকে তিনি পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেলিম হোসেনের শরীরে চেতনানাশক পুশ করে হত্যা করেন।
তবে এজাহারে শাহীন হত্যার ব্যাপারে কিছু উল্লেখ না থাকায় এ ব্যাপারে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। শনিবার বিকালে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্চিতা ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। সন্ধ্যার দিকে সাদ্দাম হোসেন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।