স্বদেশ বাণী ডেস্ক:‘দেশের মানুষ ‘বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম না বাড়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে’ সিগারেট বেশি গ্রহণ করে। অথচ বাজেটেনিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য সেভাবে বাড়েনি। এতে করে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। সস্তা সিগারেটের ব্যবহারও বাড়বে। এছাড়া নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে জর্দা-গুলকেও ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে।’
রোববার (১২ জুন) বিকেলে আহছানিয়া মিশন আয়োজিত ‘২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ওয়েবিনারে বক্তারা এমন অভিমত তুলে ধরেন।
এসময় জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা ও ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কেবল দাম বাড়েনি তামাকজাত দ্রব্যের। বাজেটে সিগারেটের নামমাত্র যে মূল্য বৃদ্ধি করা হয়, তাতে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমে না। এ কারণে সিগারেটের মূল্য বাড়লে কোম্পানিগুলোও লাভবান হয়।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, সংসদে এমপিরা যদি তামাক কর নিয়ে জোরালো ভূমিকা রাখেন, তবে এনবিআর চাইলেও তামাক কর কমিয়ে রাখতে পারবে না। এজন্য আগামীতে তামাক কর বৃদ্ধির কৌশল নির্ধারণে আমাদের আরও কৌশলী হতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসির (বিএনটিটিপি) কনভেনর ড. রুমানা হক বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের যে মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে, সেটি মুদ্রাস্ফীতি ও মাথা পিছু আয়ের হিসেবে তুলনা করলে দেখা যাবে যে সিগারেটের প্রকৃত মূল্য কমে গেছে। এটি আমাদের জন্য হতাশাব্যঞ্জক। এতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তামাক গ্রহণের মাত্রা কমবে না।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস-বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এবছর এনবিআরকে অতিরিক্ত যে ৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, সেটি তারা তামাক কর বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্জন করতে পারতো। কিন্তু এনবিআর সে সুযোগ গ্রহণ করেনি। এজন্য আগামীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির ব্যাপারে উদ্যোগী করতে হবে।
দি ইউনিয়িয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, দেশের মানুষনিম্নস্তরের সিগারেট বেশি গ্রহণ করে। অথচ বাজেটেনিম্নস্তরেরসিগারেটের মূল্য সেভাবে বাড়েনি। এতে করে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। সস্তা সিগারেটের ব্যবহারও বাড়বে। এছাড়া নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে জর্দা-গুলকেও ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে।
বক্তারা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে সরকার অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনাতেও তামাক নিয়ন্ত্রণ অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিন্তু বাজেট তার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শারমিন রিনভী, একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান।
স্ব.বা/ রু