স্বদেশবাণী ডেস্ক: প্রথমবারের মতো ইরাকে সফরে গিয়ে দেশটির শিয়া মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী সিসতানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ক্যাথলিক গির্জার নেতা পোপ ফ্রান্সিস।
শনিবার পবিত্র শহর নাজাফে দুই নেতার মধ্যে এ বিরল সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। নাজাফের সরু গলিতে অবস্থিত সিসতানির ভাড়া বাড়িতে প্রায় ৫৫ মিনিটের বৈঠক করেন তারা।
পোপ ফ্রান্সিসের এই সফর ইরাকের খ্রিস্টানদের জন্য খুব তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শুক্রবার ৩ দিনের বিরল সফরে ইরাকে পৌঁছান রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
এ সফরে দেশটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে সেখানকার খ্রিস্টানদের অবস্থার কথা তুলে ধরবেন তিনি।
সিসতানির কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, দুই ধর্মীয় নেতা তাদের আলোচনায় শান্তির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, গত কয়েক বছরে ইরাকে অন্য সব সম্প্রদায়ের মানুষের মত খ্রিস্টানরাও নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে।
এই ‘প্রতীকী সফর’ করা তার ওপর একটা কর্তব্য বলে ৮৪ বছর বয়সী খ্রিস্টান এ ধর্মগুরু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
বৈঠকে আয়াতুল্লাহ আল-সিসতানি বলেছেন, ইরাকের অন্য নাগরিকদের মতো খ্রিস্টান নাগরিকদেরও শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে এবং তাদের পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে জীবন কাটাতে না পারার বিষয়টাতে তিনি উদ্বিগ্ন।
ইরাকের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস একটা সময়ে দেশটির ‘সবচেয়ে দুর্বল এবং সবচেয়ে নির্যাতিত সম্প্রদায়ের মানুষের পক্ষ নিয়ে কথা বলার’ জন্য পোপ ফ্রান্সিস আয়াতুল্লাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, শিয়া নেতার শান্তির বার্তা ‘ইরাকের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের গুরুত্ব এবং সব মানুষের জীবনই যে পবিত্র ও মূল্যবান’ তা নিশ্চিত করেছে।
একজন ধর্মীয় নেতা হিসেবে ইরাকের মানুষের ওপর নজিরবিহীন ও সূক্ষ্ম প্রভাব রয়েছে সিসতানির। কয়েক দশকের একনায়কের শাসন, দখলদারিত্ব ও সংঘাতের মধ্যেও অনুসারীদের পথ দেখিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
৯০ বছর বয়সী সিসতানি গভীর নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করে আসছেন। প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তিনি নিজের নসিহত মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।
বিবিসি জানিয়েছে, আয়াতুল্লাহ আল-সিসতানির সাক্ষাৎ পাওয়া খুবই বিরল, তিনি মানুষজনের সঙ্গে সচরাচর দেখা করেন না। কিন্তু পোপের সঙ্গে তিনি ৫০ মিনিট ধরে কথা বলেছেন।