ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতায় সরব টিউলিপ সিদ্দিক ও রুপা হক

আন্তর্জাতিক

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট কার্যকরের আগে পার্লামেন্ট মুলতবি রাখার দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি এই ঘোষণার বিরোধিতায়  সরব হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুপা হক। আগে থেকেই চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের বিরোধিতায় সরব রয়েছেন লেবার পার্টির এই দুই এমপি। প্রধানমন্ত্রীর বুধবারের ঘোষণার পর বরিস জনসনকে গণতন্ত্র বিরোধী আখ্যা দিয়েছেন তারা। বলেছেন ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে বিরোধিতার কোনও সুযোগ এমপিদের দিতে চান না জনসন

ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর  নতুন নেতা তথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে হাঁটারও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন তিনি। সোমবার তিনি ঘোষণা দেন আগামী ১৪ অক্টোবর পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, সে পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত থাকবে।

লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘জনসন ও তার চুক্তিহীন সরকার লজ্জাজনক। তিনি আমাদের  গণতন্ত্রের মুখে থুথু দিয়েছেন। পার্লামেন্ট সার্বভৌম, সেটা কোনও প্রধানমন্ত্রীর অনুকূলে থাকুক আর না থাকুক’।

৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিটের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত পার্লামেন্ট সচল রাখার দাবিতে এমাসের শুরুতে সরকারের কাছে পাঠানো একটি আন্তঃদলীয় চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন পূর্ব লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড ও কিম্বারলি থেকে নির্বাচিত এই এমপি। লেবার পার্টির আরেক এমপি রুপা হকও ব্রেক্সিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে  পার্লামেন্ট অধিবেশনের সচল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এতে করে যদি যুক্তরাজ্যে পূর্বনির্ধারিত বার্ষিক রাজনৈতিক সভা যদি বাতিল করতে হয় তারপরও তা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

রুপা হক বলেন, ‘জাতীয় এই সংকটের মধ্যে পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকা উচিত।  সভা বাতিল করে প্রতিটা মিনিটই ব্রেক্সিট সংকট সমাধানে ব্যয় করা উচিত’।

বুধবার জনসন ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পার্লামেন্ট অধিবেশন মুলতবি রাখার পরিকল্পনার কথা বলেছেন। সরকার জানায়, ইতোমধ্যে রানী এলিজাবেথের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাকে অনুরোধ করেছেন যেন ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অধিবেশন স্থগিত রাখা হয়। এক বিবৃতিতে জনসন বলেন, আমি বিশ্বাস করি ইউরোপীয় কাউন্সিলের আগে এবং পরে দুই সময়ই পার্লামেন্ট অধিবেশন জরুরি। আমি আশা করি ইইউয়ের সঙ্গে একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। তখন পার্লামেন্ট ব্রেক্সিট চুক্তি পাশ করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের জনগণের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া উচিত-জাতীয় স্বাস্থ্য সেবায় সহায়তা করা উচিত, সহিংস অপরাধ মোকাবিলা করা উচিত, অবকাঠামো ও বিজ্ঞানে বিনিয়োগ করা উচিত। আমরা শুরু করেছি। ২০ হাজার নতুন পুলিশের জন্য অর্থায়ন করা হয়েছে, স্বাস্থ্য খাতে নতুন বিনিয়োগ করছি। তবে জনগণের গুরুত্ব যাচাইয়ে আমাদের আবার অধিবেশনে বসতে হবে এবং রানীর ভাষণও এতে প্রয়োজন।

তবে জনসনের এই পদক্ষেপকে ব্রেক্সিট নিয়ে এমপিদের বিতর্ক আটকে দেওয়ার পরিকল্পনা মনে করা হচ্ছে। এতে করে ৩১ অক্টোবর সময়সীমার আগে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের বিরোধিতা করার সুযোগ পাবে না বিরোধী দলগুলো।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *