রাজশাহী রেলে টেন্ডারের আগে মালামাল কেনা সেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শাহনেওয়াজকে বদলি

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রেলওয়ে পশ্চিম জোনের সেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। টেন্ডারের আগেই পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে স্টেশনের মালামাল কেনার জের ধরে রাজশাহীর একটি অনলাইন ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরে গত মঙ্গলবার তাঁকে ঢাকা রেল ভবন থেকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

রেলওয়ে সূত্র মতে, সর্বমোট ১৯ জন কর্মকর্তাকে বদলি করে। এরমধ্যে পশ্চিম রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজকে বদলি করা হয়।

এদিকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে শাহনেওয়াজ রাজশাহী রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরমধ্যে তিনি কোটি কোটি টাকার কাজ তার পছন্দের ঠিকাদারকে পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। আলমগীর এবং তার ভাই আলাউদ্দিন নামের দুই ঠিকাদারকে তিনি গত কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকার কাজ দেন বিনা টেন্ডারে।

এরপর নাম কোটেশনের মাধ্যমে সেই বিল পরিশোধ করা হয়। এভাবেই সম্প্রতি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের জন্য অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে ফার্নিচার বক্স লাইট এবং অভ্যর্থনা লাইট কেনা হয় ঠিকাদার আলমগীরের মাধ্যমে। এছাড়াও এই ঠিকাদার এবং তার ভাই আরেকটি কাজ আর আলাউদ্দিন এর মাধ্যমে রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশনের অন্যান্য সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হয়। এরপর নামমাত্র কাজ করে কোটি কোটি টাকা বিল পাইয়ে দিতে ব্যবস্থা করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ।

সূত্র আরও জানায়, এই দুই ঠিকাদার শাহনেওয়াজের মূলত ব্যবসায়ীক পার্টনার হিসেবে পরিচিত। যার কারণে নামমাত্র কাজ করে লাখ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে এই দুই ঠিকাদারের মাধ্যমে এর মধ্যে রয়েছে ৭-৮থেকে হাজার টাকার চেয়ার কিনে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা, ২২-২৫ হাজার টাকার সোফা কিনে ৮০-৮৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল পরিশোধ করার অভিযোগ রয়েছে।

ওই দুই ঠিকাদার ছাড়াও রাজশাহী একজন কাউন্সিলর এবং দুইজন যুবলীগ নেতার সাথে সখ্যতা ছিল প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজের। এই রাজনৈতিক নেতারাও শাহনেওয়াজের কাছ থেকে প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন যা নামমাত্র করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

প্রসঙ্গত, টেন্ডার বা কোটেশনের আগেই রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের জন্য প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজের নির্দেশে বেশকিছু ফার্নিচার, ট্রেনের বগি চিহ্নিত এলইডি লাইট ও অভ্যার্থনার জন্য এলইডি লাইটও সরবরাহ করেছেন ঠিকাদার আলমগীর হোসেন।

অভিযোগ উঠেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজের আস্থাভাজন এই ঠিকাদারকে দিয়ে আগেই কাজগুলো করে নেওয়া হয়েছে যেন বালিশ কেনার মতো করে ইচ্ছামতো বিল উত্তোলন করা যায়। এটি করতে গিয়ে স্টেশনে কিছু ভিআইপি চেয়ার (গদিওয়ালা) চেয়ারও অপ্রয়োজনে সরবরাহ করা হয়েছে।

এ নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর একটি অনুসন্ধানী খবর প্রকাশ হয়। এরপর ঢাকা রেল ভবন থেকে শাহনেওয়াজকে বদলি করা হয় গত ১৭ ডিসেম্বর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *