প্রেমের টানে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন ৫ সন্তানের জননী

জাতীয়

স্টাফ রিপোর্টার: প্রেমের টানে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা খাসিয়া নারীকে অবশেষে যেতেই হয়েছে। অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্বামীর পরিবারের লোকজন জোরপূর্বক তাকে নিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সমাধিও ঘটেছে পাঁচ সন্তানের জননী ও এক সন্তানের জনকের এই অসম প্রেমের। অপরদিকে ভারতীয় ওই নারীকে ফেরত দিয়ে সেখানে আটকে থাকা এক বাংলাদেশি ও শতাধিক গরু ফেরত আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার টিপরাখালা সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে দীর্ঘ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর বিকেল সাড়ে ৫টায় উভয় দেশে আটক নারী-পুরুষ ও গরু হস্তান্তর করা হয়।

প্রেমের টানে ভারত থেকে পালিয়ে আসা খাসিয়া নারী প্রেমিক ফিরোজ মিয়ার কাছ থেকে বাড়ি ফিরতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্বজনরা অনেকটা জোর করে নিয়ে যায়। আর এর মধ্য দিয়ে সপ্তাহ ধরে চলা দুই দেশের সীমান্তের উত্তেজনাও প্রশমিত হলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে খাসিয়া নারীকে নিতে আসেন তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন। কিন্তু তিনি ফিরে যেতে আপত্তি জানান। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এক সন্তানের জনক বাংলাদেশি যুবক ফিরোজের কাছে থাকার আকুতি জানান পাঁচ সন্তানের জননী। তবে তার এই কথায় কেউ সায় দিতে পারেনি। একপর্যায়ে তাকে কোলে তুলে বিজিবি-বিএসএফ ও পুলিশের উপস্থিতিতে সীমান্ত অতিক্রম করেন খাসিয়ারা।

পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- বিজিবির ১৯ ব্যাটালিয়নের জৈন্তাপুর ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আব্দুল কাদির, জৈন্তাপুর মডেল থানার এসআই আতিকুর রহমান রাসেল, এএসআই যমুনাসহ প্রায় ৪০ জন বিজিবি ও পুলিশ সদস্য।

অপরদিকে ভারতের পক্ষে ছিলেন- বিএসএফের হেওয়াই ক্যাম্প কমান্ডার আইএসপি সুরেন্দ্র রায়, এসআই পংকজ কুমার, এইচসি মহর সিং, ভারতীয় পুলিশের এসআই আর-এ-পারিয়াংসহ বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশের প্রায় অর্ধ শতাধিক সদস্য।

উল্লেখ্য, প্রেমের টানে ভারতীয় পাঁচ সন্তানের খাসিয়া জননীর বাংলাদেশে চলে আসাকে কেন্দ্র করে এক বাংলাদেশি নাগরিকসহ প্রায় শতাধিক গরু ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় খাসিয়ারা। অবশেষে কয়েক দফা পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বৃহস্পতিবার প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর লিখিতভাবে হস্তান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল কাদির বলেন, আমরা কয়েক দফা শান্তিপূর্ণভাবে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশে চলে আসা নারীকে পুলিশের মাধ্যমে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি, বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করি।

খাসিয়া কর্তৃক ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকসহ গরুগুলো তাদের কাছ থেকে আমরা বুঝে নেই। বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলার টিপরাখলা এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সূত্র: জাগো নিউজ।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *