দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বিএনপি

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: বিগত আন্দোলন ব্যর্থতায় ঘুরে দাঁড়াতে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বিএনপির হাইকমান্ড। এরই অংশ হিসাবে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ, ভাইস চেয়ারম্যানসহ নির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদ পূরণ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল করেছিল বিএনপি। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় নির্বাহী কমিটি ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হবে এবং পরবর্তী জাতীয় নির্বাহী কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত এই কমিটিই দায়িত্ব পালন করবে। দলটির নেতাদের দাবি, সরকারের দমন-পীড়নের কারণে কাউন্সিল করা যায়নি।

দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর সম্মেলন (কাউন্সিল) করে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করার কথা বিএনপির। কিন্তু দীর্ঘ আট বছর ধরে দলটির কাউন্সিল হচ্ছে না। সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন সামনে রেখে দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরুর মধ্যে চলতি বছরেই জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে ভাবছে দলটি। তবে এর আগে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ, ভাইস চেয়ারম্যানসহ নির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদ পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে হাইকমান্ড।

একই সঙ্গে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতেও কো-অপ্ট করতে পারে ৫ জনকে। এসব শূন্য পদে যোগ্য ও পরীক্ষিতদের স্থান দিতে চায় দলটি। এ উদ্যোগ শুরু করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় শূন্য পদে দেওয়া হয়েছে অন্তত ২৭ জনকে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, শূন্য পদ পূরণের এখতিয়ার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের। তিনি যাকে ভালো মনে করবেন তাকে দেবেন। বিভিন্ন শূন্য পদ পূরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে শূন্য পদে দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের কিছু দিন পর স্থায়ী ও নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৫০২ সদস্যের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হলেও বেশ কয়েকটি পদ ফাঁকা ছিল।

এছাড়া স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ নির্বাহী কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা মারা গেছেন। কেউ কেউ পদত্যাগও করেছেন। কাউকে আবার বহিষ্কারও করা হয়। পদোন্নতি দিয়ে কয়েকটি পদ পূরণ করা হলেও অনেক পদ এখনো ফাঁকা। ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির শুরুতেই দুটি পদ ফাঁকা ছিল। এরপর তরিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এমকে আনোয়ার ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মারা যান।

এছাড়া রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। যদিও তার পদত্যাগপত্র বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান কোনোটিই করা হয়নি। অসুস্থ থাকায় ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া স্থায়ী কমিটির বৈঠকসহ কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন না।

এর মধ্যে ২০১৯ সালের জুনে বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে স্থায়ী কমিটির শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই হিসাবে এখন সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। ৩৭ জন ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ১২টি পদই ফাঁকা। এছাড়া ৭৩ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির মধ্যেও বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যেও কয়েকজন মারা গেছেন।

কয়েকজনকে বহিষ্কার আর কয়েকজন স্বেচ্ছায়ও পদত্যাগ করেছেন। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩০টির মতো পদ এখন শূন্য। তাছাড়া বয়সের কারণেও বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয়।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা জানান, এমন পরিস্থিতিতে সব দিক বিবেচনা করে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ৫টি শূন্য পদ দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিছন্ন রাজনীতিবিদ যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজে দক্ষতা দেখিয়েছেন-এমন নবীন-প্রবীণ নেতা মিলিয়ে স্থায়ী কমিটিতে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের নিয়োগ দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

এছাড়া দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পরও অনেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন না। এ ধরনের যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদেরকে কেন্দ্রীয় শূন্য পদে নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। সূত্র: যুগান্তর

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *