নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রায় চার বছর ধরে হাসপাতালে নেই চক্ষু বিশেষজ্ঞ!

জাতীয় লীড

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলবাসীর চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রায় চার বছর ধরে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে চক্ষু সেবা থেকে যেমন রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি অপারেশনের যন্ত্রপাতি অব্যহৃত থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে ইউপি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন উপ-সহকারী দিয়ে নাম মাত্র চোখের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাস থেকে নড়াইল সদর হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। জেলা ৩টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চোখের চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য রোগী উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে রোগীদের চিকিৎসার জন্য যশোর, খুলনাসহ রাজধানী ঢাকা শহরে যেতে হচ্ছে। নড়াইল হাসপাতালের বহির্বিভাগের ১২০ নম্বর কক্ষে চোখের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চোখের চিকিৎসক না থাকায় নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউপি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী মো. জাহিদুল ইসলাম চোখের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি চোখের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের তিনিই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তবে জটিল রোগীদের খুলনা বা যশোরে রেফার্ড করা হয়ে থাকে। এ হাসপাতালে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য উন্নতমানের যন্ত্রপাতি থাকলেও তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চোখের চিকিৎসা নিতে আসা আকলিমা বেগম বলেন, তিনি মাস খানেক আগে এসে চোখের ডাক্তার দেখিয়েছেন। কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় পুনরায় দেখাতে এসেছেন। লোহাগড়া উপজেলার বাড়িভাঙ্গা গ্রামের কোবাদ লস্কার বলেন, আমি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। চোখের ডাক্তার দেখাতে নড়াইল সদর হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ডাক্তার না দেখিয়েই ফিরে গেলাম।

কালিয়া উপজেলার নওয়াগ্রামের জিয়াউল ইসলাম সেলিম জানান, তার এক আত্মীয়কে চোখের চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় খুলনা থেকে আসা একজন চিকিৎসককে ৫০০ টাকা ফিস দিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে দেখিয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসক থাকলে আমাদের অতিরিক্ত অর্থের অপচয় হতো না। নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য শূন্যপদে চিকিৎসক পদায়নের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার পত্র দেয়া হয়েছে। শূন্যপদে চিকিৎসক পদায়ন হলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। হাসপাতালে চোখের রোগীদের অপারেশনের সব যন্ত্রপাতি থাকলেও কনসালটেন্ট না থাকায় অপারেশন করা যাচ্ছে না।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *