দেশে এক কোটির বেশি শিশু করোনা টিকা পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক : দেশে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস মোকবিলায় এতদিন প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলগামী শিশুদের টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন দেশে এক কোটির বেশি শিশুকে করোনা টিকা দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ থেকে ১৭ বয়সী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলক করোনা টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

‘এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রথম পর্যায়ে ৩০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। এরপর সারাদেশে এক কোটির বেশি ছেলেমেয়েকে আমরা টিকা দেব। এটা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। আমাদের হাতে এখন ৬০ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা আছে। সারাদেশে ২১টি জায়গায় টিকাদান কার্যক্রম চালানো হবে। ঢাকায় একটি বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও টিকাদান হবে।’

বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর নিজস্ব জেলা মানিকগঞ্জের চারটি বিদ্যালয়ে নবম ও দশম শ্রেণির ১২০ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়ে। এরমধ্যে জেলা শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ জন, সরকারি এস কে বালিকা বিদ্যালয়ের ৫০ জন, গড়পাড়া জাহিদ মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ জন এবং আটিগ্রাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থীকে ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়।

শিশুদের টিকা কার্যক্রম কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে আসছে। তারা যাতে করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকে। স্বাস্থ্যগতভাবে সুরক্ষিত থাকে, সেজন্য আজ পরীক্ষামূলকভাবে আমরা স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু করলাম। আগমাীতেও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যুগান্তরকে জানিয়েছে, করোনাভাইাসের টিকা নেওয়ার আগে জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে টিকার নিবন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। টিকা দেওয়ার পর তাদের বিশ্রামকেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছাড়াও একাধিক কর্মকতা, মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ও অন্যান্য চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে রোববার মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, শিগগিরই শিশুদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু হবে। মন্ত্রী সেদিন বলেন, সুইজারল্যান্ড সফরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক এবং গ্যাভির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে সায় দিয়েছেন। গ্যাভিও ফাইজার ও মডার্নার টিকা বেশি করে দিতে আশ্বস্ত করেছে।

এছাড় বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম ফেসবুক লাইভে এসে জানিয়েছিলেন, যাদের টিকা দেওয়া হবে, তাদের ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। একইদিন দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও নন
কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন আগামী বছরের (২০২২ সাল) প্রথম অংশের মধ্যেই সারাদেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে করোনা টিকার আওতায় আনার আশা ব্যক্ত করেন। ওই সময় অধ্যাপক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, দেশে ৫ কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৯৩ জন কোভিড-১৯ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে পাসপোর্টের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন ৭ লাখ ১৬ হাজার ৪৯৬ জন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকিবালায় এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে সরকার। এতদিন বয়স্করা টিকা পেলেও ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুরা এই কার্যক্রমের বাইরে ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বুধবার পর্যন্ত সারাদেশে ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজারের বেশি মানুষ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *