তিন বছর পর ১৪ দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: তিন বছর পর ১৪ দলীয় জোট নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক আজ। বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণবভনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে নিজেদের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে জোটকে আরও সুসংগঠিত ও সক্রিয় করার কথা তুলে ধরবেন শরিক দলের নেতারা। পাশাপাশি জোটের সাংগঠনিক কর্মকৌশল নির্ধারণ এবং শরিকদের নানা সমস্যা নিয়েও আলোচনা হবে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দুর্নীতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করবেন জোট নেতারা।

এদিকে আজকের বৈঠকে যাচ্ছে না ১৪ দলীয় জোটভুক্ত বাংলাদেশ জাসদ (আম্বিয়া)। তারা বলছেন, ১৪ দল এখন ‘ডেড ইস্যু’। এই জোটের সঙ্গে ‘কন্টিনিউ’ করার কোনো মানে নেই।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের কিছু দিন আগে জোট নেতাদের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠক করেন। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলেও আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৪ দল শরিকদের কারও ঠাঁই হয়নি। এর আগের দুই মেয়াদের সরকারে থাকা মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির কাউকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।

বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া যুগান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলীয় জোটের বৈঠক আহ্বান করেছেন। কিন্তু আমরা সেখানে যাচ্ছি না। এটা ফাইনাল সিদ্ধান্ত। তিনি আরও বলেন, ‘১৪ দলে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাজ কী? এখানে জোটের কাজ কী? জোটের তো কোনো কাজ আর দেখি না। সরকার ও তাদের মন্ত্রীরা যা খুশি তাই করছেন। জোট থেকে শুধু আওয়ামী লীগের দিবসগুলো পালন করা হয়। আগে সব বিষয়ে জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হতো। এখন দেশ কীভাবে পরিচালনা হবে সে বিষয়ে জোটের সঙ্গে আলোচনা হয় না। কাজেই জোটের আর কোনো কাজ নেই। তাই জোটের বৈঠকে যাওয়ার প্রয়োজনও নেই।’

তাহলে কি আপনারা আর ১৪ দলীয় জোটে থাকছেন না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৪ দল এখন ‘ডেড ইস্যু’। এই জোটের সঙ্গে ‘কন্টিনিউ’ করার কোনো মানে নেই। তবে জোটের অন্য সব শরিক দলের নেতারা আজকের বৈঠকে অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে প্রতিটি দল থেকে শীর্ষ দুইজন করে নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদ ও সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন নেতা অংশ নেবেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন যুগান্তরকে বলেন, আমাদের দলের পক্ষে আমি এবং আমাদের সাধারণ সম্পাদক অংশ নেব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈঠকে অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে। সমসাময়িক পরিস্থিতি, রাজনীতি সবকিছু নিয়েই কথা হবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার বলেন, ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। এ জোট একটি আদের্শের ভিত্তিতে তৈরি। সাম্প্রদায়িক ইস্যু, জঙ্গি, সন্ত্রাস, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইস্যু সবকিছু নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া আগামী দিনে ১৪ দলীয় জোটের কার্যক্রম কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, বেশকিছু কারণে আমাদের বৈঠকটা জরুরি হয়ে গেছে। বসলেই সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদের দলেরও দুজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১৪ দলের যে কমিটমেন্ট, সেখান থেকে যেন আমরা দূরে সরে না যাই, সেই বিষয়ে কথা বলব। এছাড়া মানুষের সমস্যাগুলো রয়েছে, যেমন দ্রব্যমূল, দুর্নীতি, সুশাসন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কথা বলব।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ বড়ুয়া যুগান্তরকে বলেন, বৈঠকে আমাদের দলের দুজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা দুজনই যাব। তিনি বলেন, বৈঠকে আলোচনার তেমন কোনো এজেন্ডার কথা এখনো জানি না। তবে বসলে তো অনেক বিষয় নিয়েই কথা হবে।

বাংলাদেশ গণআজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এসকে সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে আমরা যোগ দেব। জোট শাক্তিশালী করার ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।

স্ব.বা/ রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *