শেরপুরে চোর সন্দেহে কিশোরকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মোবাইল চোর সন্দেহে মনিরুল ইসলাম ওরফে (১৪) পুতুরা নামের এক দরিদ্র কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

গত রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নালিতাবাড়ী উপজেলার পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ওই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে ইসহাক মিয়া (৩০) ও রবিউল মিয়া (২০)। তাদেরকে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

আদালতের বিচারিক হাকিম মোহসিনা হোসেন তুশি আগামী রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নালিতাবাড়ীর পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় আলী হোসেনের বাড়ির লোকজন একই গ্রামের নানাবাড়িতে থাকা ওই কিশোরকে সন্দেহ করে। ওইদিন পুতুরাকে ধরে পরনের লুঙ্গি খুলে কাঁধে ঝুলিয়ে টেনে-হিঁচড়ে আলী হোসেনের ভাই আব্দুস সালামের বাড়িতে নিয়ে যায় সালামের দুই ছেলে ইসহাক ও রবিউলসহ অন্যরা। পরে তাকে ওই বাড়ির নারিকেল গাছে পেছনে হাতমোড়া দিয়ে রশিতে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে ওই কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কিশোরের নানাবাড়ির লোকজন তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

মোবাইল চুরির অপরাধে কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি ভাইরাল হলে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কিশোরকে দেখতে যান এবং তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার কিশোরের নানা মকবুল হোসেন বাদী হয়ে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নালিতাবাড়ী থানায় আলী হোসেন, ইসহাক মিয়া ও রবিউলর মিয়ার নাম উলে­খসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ইসহাক ও রবিউলকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহুরুল হক জানান, নির্যাতনের শিকার কিশোরের বাবা ও মায়ের মধ্যে ছাড়ছাড়ি হয়ে গেছে। বর্তমানে কিশোরটির মা ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাবাও তার কোনো খোঁজ করেন না। তাই কিশোরটি তার দরিদ্র নানার আশ্রয়ে থাকে।

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, মোবাইল চুরি সন্দেহে গাছে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত ২ জনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *