বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে কৃষকদের এই দুরাবস্থা অবস্থা হত না:মিনু

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার:
কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত এবং পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবরে মাহনগর বিএনপি’নর নেতৃবৃন্দ রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মী কোর্ট শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত হন। সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথ সবায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিথ ছিলেন রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানা, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি বজলুর রহমান কচি, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি সহিদ আলম, ১নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর আলী, ২নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর আবু সাঈদ টুকু, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়া, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরু, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল, বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, মহানগর যুবদলেল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজির হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক বীন খালেদ ও মহানগর যুব দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বিপ্লব।

এছাড়াও মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক গুলশান আরা মমতা, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম জনি, জেরা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম কুসুম, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি ও নাহিন আহম্মেদসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধথান অতিথির বক্তব্যে মিনু বলেন, বিএনপি আমলে কোন কৃষককে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হয়নি। কৃষকরা সর্বদা পণ্যের ন্যায্য মুল্য পেয়েছে। শহীদ প্রেডিডেন্ট জিয়াউর রহমান কৃষকদের সুবিধা ও দেশে কৃষি বিপ্লব ঘটানোর জন্য খালকাটা ও গভীর নলকুপ স্থাপন নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন। যারফলে কৃষকগণ সাব্লম্বী হতে পেরেছিলেন। কিন্তু বর্তমান এই সরকারের সময়ে কৃষকরা ধান রাস্তায় ফেলে এবং ধান পুড়িয়ে দেশব্যাপি আন্দোলন করছে। কিন্তু এতে সরকারের কোন পদক্ষেপ নাই। অথচ পারমানবিক কেন্দ্রে একটি বালিশ কেনা হয়েছে সাড়ে নয় হাজার টাকায় বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেইসাথে কৃষকদের ন্যায্য প্রদানের জন্য সরকারের নিকট দাবী জানান মিনু।

বক্তব্য শেষে তারা বিভিন্ন দাবী সম্মলিত যেমন বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেকগুণ কম হওয়ায় কৃষকরা হাহাকার করছে। উৎপাদন খরচ থেকে তিনশত টাকা কমে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার টাকা। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে। সরকার প্রতি মন ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকী টাকা যাচ্ছে সরকারের আনুকুল্য পাওয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।

এ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। ধানের দাম কমার জন্য উদ্ভুত সংকটে সরকার উদাসীন। এ বিষয়ে তাদের কোন দায় নেই বলে কৃষিমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণেই কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা ও দেশের প্রাণ। কৃষকদের রক্ষা করতে না পরেলে দেশে দুর্যোগ নেমে আসবে। তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রাজশাহী মহানগর, মধ্যস্থতাকারি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য সরকারকে আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।

পাশাপাশি জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরীসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বিভিন্ন পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। ১০ থেকে ১৫ সপ্তাহ মজুরী না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ২০১৫ সালের মুজুরী কমিশন রোয়েদাদ এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ রমজান মাস শুরু হয়েছে। এ মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য কেনার সামর্থ তাদের নেই। কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমজীবি মানুষের স্বার্থের প্রতি সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাদের ওপর শোষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। শ্রমিকরা পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে বিনিময়ে তারা মজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে বৈষম্য ও বঞ্চনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রাজশাহী মহানগরের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলি সরকারকে মেনে নেয়ার জন্য ডিসি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে আহ্বান জানান তারা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *