আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর প্রতিনিধিঃ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে নাটোরের গুরুদাসপুরের মশিন্দা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব হোসেন লাবু সহ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এর আগে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের নিয়োগ স্থগিত ও নিয়োগ বানিজ্যের সাথে জড়িতদের অপসারন দাবীতে বিক্ষেভ সমাবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মশিন্দা স্কুলের সৃষ্টপদে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মি, একজন আয়া ও একজন নিরাপত্তা রক্ষী পদে নিয়োগের জন্য ১৩ জুলাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৭ জুলাই। অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষক সহ ম্যানেজিং কমিটি অর্থের বিনিময়ে তিনজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীদের মধ্যে চাপা ক্ষেভের সৃষ্টি হয়। এক পযার্য়ে প্রতিবাদ জানিয়ে নিয়োগ বাতিলের দাবী জানায় তারা। পরিস্থিাতি সামাল দিতে নিরাপত্তা রক্ষী পদে নিয়োগ প্রদানের পর তা বাতিল করা হয় এবং ওই প্রার্থীর কাছে থেকে নেওয়া ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়।
মশিন্দা ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ বাবলু ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপন মোল্লা বলেন, স্কুলের তিনটি সৃষ্টপদে আবেদনকারী চারজনের কাছে থেকে টাকা নেন প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি। টাকার বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের লোককে স্কুলে নিয়োগ দেয়াসহ নিয়োগ না হওয়ায় একজনের টাকা ফেরত দিয়েছেন অভিযুক্তরা। এর প্রমাণও আছে। অবিলম্বে স্কুলে নিয়োগ স্থগিত চেয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মাহাবুব হোসেন লাবু বলেন, অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে স্কুলের পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং আয়া পদে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির লোককে নিয়োগ না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। গত ১৩ জুলাই মশিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সৃষ্টপদে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী, একজন আয়া ও একজন নিরাপত্তা কর্মি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই চা বিক্রেতা জানান, নাইটগার্ড পদে ছেলের চাকরির জন্য ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চাকরি হয়নি। পরে বিভিন্নভাবে চাপ দিলে ওই টাকা ফেরত পান তিনি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সরদার জালাল উদ্দিন বলেন, আসন্ন মশিন্দা ইউপি নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ায় একটি কুচক্রী মহল সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মশিন্দা হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটি আগে থেকেই ব্যতিক্রম। অর্থের বিনিময়ে কোনোদিন কোনকিছু করেনি। এর আগেও অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এবারই কিছু স্বাথান্র্বেষী গোষ্ঠি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, প্রার্থীদের আবেদন পর্যবেক্ষণ করে বিস্তারিত জানার পর একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও স্যারের কাছে দাখিল করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।