আব্দুল হামিদ মিঞা,বাঘা:
রাজশাহীর বাঘায় চাঞ্চল্যকর শর্মিষ্ঠা সাহা (২৪) হত্যা মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে ন্যস্ত করা হয়েছে। প্রায় ৫মাস ধরে মামলাটি তদন্ত করে হত্যার কোন ক্লু খুঁজে পায়নি পুলিশ। পরে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে পুলিশ। বাদির না রাজির আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি পুণঃ তদন্তের জন্য মামলার ডকেট রাজশাহী পিআইবি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর মামলার প্রতিবেদনের দিন ধার্য করে এ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সুত্র জানায়, হত্যার রহস্য উদঘটনে পুলিশ ব্যর্থ হলে মামলার বাদি মামলাটি পুণঃ তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৮ নভেম্বর গৃহবধু শর্মিষ্ঠা সাহার স্বামীর ঘর থেকে তার মরাদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে আতœহত্যা করেছে বলে প্রচারনা চালানো হয়। সুত্র জানায়, লাশ উদ্ধার হওয়ার পর তার বাবা সুনীল কুমার সাহা বাদি হয়ে গৃহবধুর স্বামীসহ ৩জনকে আসামী করে রাজশাহীর বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্তকারি অফিসার হত্যার কোন ক্লু বের করতে না পেরে আতœহত্যা করেছে বলে আদালতে চার্জশীট দেয়। এতে না রাজির আবেদন করেন বাদি।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই বাঘা উপজেলার চকনারায়নপুর গ্রামের অজিত সাহার ছেলে সুকান্ত সাহার সঙ্গে বিয়ে হয় রাজশাহীর মেয়ে শর্মিষ্ঠা রানি সাহার। বাবা সুনীল কুমার সাহা অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকে শ্বাশুড়ী মলি রানি সাহা মাঝে মধ্যে মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো। এর প্রতিবাদ না করে মায়ের পক্ষ নিত স্বামী সুকান্ত সাহা। ঘটনার দিনও (২৮ নভেম্বর) একইভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে শ্বাশুড়ী। এর প্রতিবাদ করলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে শ্বাশুড়ী মলি রানি সাহা ও তার ছেলে সৌমেন সাহা ও স্বামী সুকান্ত সাহা। আতœহত্যা করেছে বলে লাশ শয়নকক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। হত্যা মামলা দায়েরের পর আসামির সঙ্গে আঁতাত করে অর্থের বিনিময়ে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে বাঘা থানা পুলিশ। এমনকি ১৬১ ধারার জবানবন্দি না লিখে মনগড়া প্রতিবেদন প্রদান করা হয়েছে।
শর্মিষ্ঠার স্বামী স্কুল শিক্ষক শুকান্ত সাহা জানান, ঘটনার দিন বিকেলে স্ত্রীর সাথে কথা বার্তা বলে বাজারে যান। রাত পৌনে ৮ টায় বাজার থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখেন। ডাকাডাকির পর কোন সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে গলায় ওড়না প্যাচানো অবস্থায় ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখেন। শাশুড়ি মল্লিকা সাহা জানান, তার স্বামী বাইরে থাকলে, ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতো। ঘটনার দিন একইভাবে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। পিবিআই এর তদন্ত কর্মকর্তা ফাছির উদ্দীন বলেন, রহস্য উদঘটনে তদন্ত চলছে। শেষ হলে সবকিছু জানা যাবে।