সারোয়ার হোসেন,তানোর: রাজশাহীর তানোর উপজেলা কমপ্লেক্সের ৩১ শয্য বিশিষ্ট দ্বিতলা কোটি টাকার ভবন রান্না ঘরসহ আরো কিছু ছোট ছোট ঘর প্রায় ৬ লাখ ২০ টাকায় নিলাম দেন জেলা সিভিল সার্জন কর্তৃপক্ষ। প্রকাশ্যে দিবালোকে এবং কর্তৃপক্ষের সহায়তায় নিলামে অংশ নেয়া ঠিকাদারকে এমন লাভ জনক ভবন পেয়ে দিতে অন্য ঠিকাদারদের মাঝে ১৬ লাখ টাকায় সোমঝতা করে পচন্দের ঠিকাদারকে নিলাম পাইয়ে দিয়েছেন সিভিল সার্জন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ্যে এমন ভয়াবহ দুর্নীতি হলেও রহস্যজনক কারনে কর্তৃপক্ষ একেবারেই নিরব থাকায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ অসন্তোষ বিরাজ করছে ।
এমন রহস্য জনক বিষয় জানতে চলতি মাসের ১৬ জানুয়ারি বুধবার বিকেল তিনটার দিকে যাওয়া হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় মুল ফটকে প্রবেশ করে ভিতরের রাস্তার দক্ষিনে ছোট লাল ভবন সেখানে বেশির ভাগ সময় ঔষূধ বিক্রেতাদের থাকে আড্ডা । তাঁর পরেই ১৯৬১ সালে নির্মিত দ্বি তলা বিশিষ্ট ৩১ শয্যার মুল ভবন। যার উপরে ছিল ৩১ শয্য বিশিষ্ট মহিলা পুরুষ ওয়ার্ড । নিচ তলায় ছিল যাবতীয় মেডিকেল চেম্বার । মুল ভবনসহ কিছু ছোট ভবন ভাঙ্গা প্রায় হয়ে গেছে। ছাদ পাকা দেয়াল ভেঙ্গে ইট রোডসহ যাবতীয় নিলামের আসবাবপত্র রাখা হয়েছে সামনেই । ভবন ভাঙ্গছে মিস্ত্রিরা এবং মোবাইলে কথা বলা নিয়ে ব্যাপক ব্যস্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আজাদ স্যানেটিসেনের মালিক আজাদ । দাঁড়িয়ে আছে পিলার ও কিছু ছোট ঘর ।
অবশ্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লিখাটি এবং স্থাপনের তারিখ কালো কালিতে লিখা দেখা গেছে। প্রতি বছর ভবনটি সংস্কারের নামে লাখলাখ টাকা খরচ করলেও স্থাপনের সময় ১৯৬১ সালের মুল্য তালিকা ধরে নিলাম দেয়া হয়। অথচ গত বছর জেলা সিএমএম কার্যালয় থেকে প্রায় ১২/১৪ লাখ টাকায় সাংস্কার করা হয় । বছরে যদি নিম্মে ১০ লাখ টাকা সাংস্কারে খরচ তাহলে কত কোটি হবে কোন হিসাব নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। ১৯৬১ সালের নির্মাণ খরচ দেখিয়ে মাত্র প্রায় ৬ লাখ ২০ হাজার টাকায় নিলাম দেয়া হয় । আর প্রকাশ্যে যোগসাজশে ১৬ লাখ টাকায় সমঝতা হয়। পচন্দের ব্যাক্তিকে প্রচুর লাভ জনক নিলামটি পাইয়ে দিতে এমন অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলারমত খেলা হয়। এত বিশাল বড় অনিয়মের ঘটনাটি দুর্নীতি দমন স্থানীয় প্রশাসন সবাস্থ্য বিভাগকে কঠোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে ।
কোটি কোটি টাকার ভবন কেন এমন আদি সনাতন নিয়মে মাত্র ৬লাখ ২০ টাকায় হচ্ছে নিলাম , আবার নিলামের দ্বিগুনেরও বেশি ১৬ লাখ টাকায় নিলামে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মাঝে হচ্ছে আঁতাত । ডিজিটাল যুগে কি চমৎকার ভাবে আদি কালের নিয়মে দেয়া হচ্ছে নিলাম। এর চেয়ে হাস্যকর আর কি হতে পারে।স্থানীয় বাসিন্দা মালিক জানান গত বছর শুধু রান্নাঘর ৭লাখ টাকা খরচ করে সাংস্কার করা হয়েছে। ৩১ শয্যার ভবন ভাঙ্গা প্রায় শেষের দিকে । ভবন থেকে নিম্মে ৩লাখ ইট ৫০০ মন রোড বের হবে। তারপরেও গ্রিলসহ যাবতীয় আসবাব পত্র । কোটি কোটি টাকা মুল্যের ভবন কিভাবে ৬লাখ ২০ হাজার টাকায় নিলাম হয় বুঝে আসেনা। এসব নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাবকে অধিকতর তদন্তের দাবি জানান তিনি ।
এনিয়ে জেলা সিভিল সার্জনের ০১৭১২৫০৩৬০৯ নম্বরে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করে বলেন নিয়ম অনুযায়ী নিলাম হয়েছে । যে সব থেকে বেশি দর ফেলেছে সে কাজটি পেয়েছে। কোটি কোটি টাকার ভবন কিভাবে ৬লাখ ২০ হাজার টাকায় নিলাম হয় জানতে চাইলে তিনি জানান পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন করে কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার দেখে নিলাম হয়েছে। আপনি আর্থিক সুবিধা নিয়ে পচন্দের ঠিকাদারকে ভবনটি পাইয়ে দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে নিয়ম অনুযায়ী কাজ হয়েছে বলে এড়িয়ে যান। পরে ফোন দিয়ে নাম জানতে চাইলে কেন নাম লাগবে বলে উল্টো তিনি প্রশ্ন করলে বলা হয় খবর প্রকাশ করা হবে এজন্য , তখন তিনি বলেন খবর প্রকাশের দরকার নাই অফিসে আসেন সাক্ষাতে কথা হবে বলে জানান তিনি।
সুত্রে জানা যায় সিভিল সার্জন মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে পচন্দের ঠিকাদার হাজী কাজটি পাইয়ে দিয়েছেন । ঠিকাদারের লোক ভবন ভাঙ্গার দায়িত্বে থাকা আরেক ঠিকাদার পাখির ০১৭১১১১৭০১৩ নম্বরে ফোন দিয়ে ভবন নিলাম সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে তিনি জানান এসব অফিসে গিয়ে জানান আমার কাছে কেন। ১৬ লাখ টাকায় কিভাবে সোমঝতা হল প্রশ্ন করা আবারো বলেন অফিসে গিয়ে খোজ নেন সব পাবেন। এমন কি কাজ পাওয়া ঠিকাদারের মোবাইল নম্বর চাইলে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।