রাজশাহী মহানগরীতে করোনার রিপোর্ট নিয়ে প্রতারণা; প্রতারক চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীতে করোনা সার্টিফিকেট প্রতারণা চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানার কাঁপাসিয়া বাজারের মোঃ আহসানউল্লাহর ছেলে মোঃ তারেক আহসান আপেল (৩৫) ও তার দুই সহযোগী বোয়ালিয়া থানার হেতেমখাঁ লিচু বাগান ওয়াবদা কলোনীর মোঃ আশরাফুল ইসলামের ছেলে  মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪০) এবং রফিকুলের স্ত্রী মোসাঃ সামসুন্নাহার শিখা (৩৫)।

রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজশাহী মহানগরীতে একটি প্রতারক চক্র রাজশাহী মহানগরীর  জাদু ঘরের মোড়ে অবস্থিত বক্ষ্যব্যাধী ক্লিনিক কেন্দ্রীক পিপিআই সেন্টারে (কোভিড-১৯ (করোনা) টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে বিদেশগামী সহ অন্যান্যদের সাথে প্রতারণা করে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার, জনাব মোঃ আরেফিন জুয়েল এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ আশিক ইকবাল সহ গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করে। এরপর গতকাল ৭ জুলাই ২০২১ রাত্রী  ৯.৩০ টায় মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার হেতেমখাঁ ওয়াবদা কলাবাগান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের দুই সদস্য রফিকুল ও তার স্ত্রী শিখাকে আটক করেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা পর আসামী তারেককে আজ ১১.৩০ টায় বোয়ালিয়া থানার যাদুঘরের সামনে হতে আটক করেন।

আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিদেশগামীরা করোনা টেস্টের জন্য, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা, সদর হাসপাতাল ও বক্ষ্যব্যাধী হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিসে স্যাম্পল জমা দিয়ে থাকেন। তাদের অনেকেরই ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে টেস্ট রিপোর্টের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। এই সুযোগটা তারা কাজে লাগিয়ে করোনা টেস্টের নমুনা প্রদানের ফরম হতে মোবাইল নম্বর ও নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে। সেই সাথে তারা অফিসের পিয়ন বা কম্পিউটার অপারেটরের মাধ্যমে করোনা টেস্টের রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করে। এরপর বিদেশগামীদের ফোনের মাধ্যমে জানায় তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ নিয়ে দিতে পারবে বলেও জানায়। সেক্ষেত্রে বিদেশগামীদের অবস্থা বুঝে ৩০০০-১৫০০০ টাকার বিনিময়ে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট সরবরাহ করত। মুলত তাদের টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। বিদেশগামীসহ অন্যান্যরা দ্রুত সময়ে করোনা রিপোর্ট পাওয়ার জন্য উক্ত টাকা ঐ চক্রের হাতে তুলে দিত।

 

গ্রেফতারকৃত আসামীরা আরো জানায়, তারা ২০২০ সালের মার্চ মাস হতে কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সরকারী নির্দেোনুয়ায়ী ০১ লা মে হতে করোনা টেষ্ট শুরু হয়। তখন হতেই তারা বিদেশগামী ও প্রবাসী যুবক-যুবতীদের সাথে এই প্রতারণা করে আসছে।

আরএমপি’র সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের নির্দেশনায় রাজশাহী মহানগরীকে সকল প্রকার অপরাধ, প্রতারনা, মাদক ও চোরাচালান নির্মূল করার লক্ষে এর ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *