শেরপুর সংবাদাতা: শেরপুরের জেলাত নালিতাবাড়ীতে উপজেলায় বাক প্রতিবন্ধী দিনমজুর এক দরিদ্র নারীর জমি দখল করে রাতের আঁধারে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের খড়িয়া বাঘবেড় গ্রামে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক এ রাস্তা নির্মাণ হয়। সরেজমিনে গেলে জানা যায়, ওই গ্রামের বাছির উদ্দিন সত্তরের দশকে একমাত্র প্রতিবন্ধী শিশুকন্যা নাছিমা খাতুন ওরফে নবিছা খাতুন ও স্ত্রীকে রেখে মারা যান। এরপর বাছিরের স্ত্রী একমাত্র দুগ্ধপোষ্য কন্যাকে নিয়ে পিতার বাড়ি ভালুকাকুড়া গ্রামে চলে যান।
তবে স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তির অংশ থেকে কন্যার এক একর বায়ান্ন শতাংশ জমি ভাসুর রুস্তম আলীর কাছে বর্গা দেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে পিত্রালয়ে থাকলেও কন্যার বর্গচাষী ভাসুরের কাছ থেকে তার ফসলের অংশ নিয়ে সংসার চালাতেন। ২০১৩ সালে ভাসুর রুস্তম আলীও মারা যান। ফলে প্রতিবন্ধী কন্যার ওই জমিটুকু ভাসুরের বড় ছেলে অর্থাৎ প্রতিবন্ধী কন্যার জেঠাতো ভাই মোহাম্মদ আলী ওই জমি বর্গাচাষ শুরু করেন। ২০১৭ সালে এসে মোহাম্মদ আলী প্রতিবন্ধী বোনের অংশ থেকে ৫২ শতক জমি নিজের বলে দাবী করে এবং ফসলের ভাগ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এসময় স্বজনেরা প্রতিবাদ করলে প্রতিবন্ধী নাছিমা তাকে ২০০০ সালের ১৮ জুন ওই জমি লিখে দিয়েছে বলে দাবী করে এবং দলিল প্রকাশ করে। ফলে প্রতিবন্ধী অসহায় চাচাতো বোনের পক্ষে মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই কেরামত আলী ২০১৭ সালের ১৬ মে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাল টিপসইয়ের অভিযোগ এনে মোকদ্দমা দায়ের করেন। মোকদ্দমার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক ও অঙ্গুলাংক বিশারদ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ফরেনসিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে মোহাম্মদ আলীর দাবীকৃত দলিলে প্রতিবন্ধী নাছিমার টিপসই জাল বলে একই বছরের ২১ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালতের নির্দেশে জাল টিপসই ও প্রতারণামূলক জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগে নালিতাবাড়ী থানায় একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী জালিয়াতকারী মোহাম্মদ আলী ও ওই দলিলের লেখক এবং সাক্ষীদের আসামী করে মামলা নথিভুক্ত করা হয়। এ মামলায় জালিয়াতকারী মোহাম্মদ আলী জেলহাজতেও যান। মামলাটি এখনও আদালতে বিচরাধীন।
এদিকে জালিয়াতির মামলার ফলে নালিশি ৫২ শতক জমি মোহাম্মদ আলীর দখলমুক্ত হয়। তবে প্রতিবন্ধী নাছিমা শহরের অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করায় জমিটুকু অনাবাদি রয়ে যায়।
স্ব.বা/ রু