আল-আফতাব খান সুইট, বাগাতিপাড়া (নাটোর):
নাটোর সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমনা সরকার (৪৫), তার বাবা সুনিতী রঞ্জন সরকার (৬১) ও মা করুনা রানী সরকারকে (৫৬) আদালতের আদেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে তাদের তিন জনের জামিন আবেদন জানানো হলে বিচারক ৩ জনকেই অন্তবর্তী জামিন দিয়েছেন।
সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ জানান, বুধবার (২৫ মে) দুপুরে ওই আসামীসহ মামলার মোট ৫ আসানীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর আদেশ পান তিনি। এরপর অভিযান চালিয়ে ওই ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরের আগেই তাদের কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে। বাঁকি আসানীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কোর্ট ইন্সপেক্টর নজমূল হক জানান, বিকালে ওই আসামীদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের আইনজীবী আদালতে তাদের পক্ষে জামিনের আবেদন জানালে আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে অন্তবর্তী জামিন দিয়েছেন।
বাড়ির সীমানা প্রাচীর দ্বন্দ্বে সিনিয়র আইনজীবী অজিত কুমার বিশ্বাসের দায়ের করা মামলার জেরে আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী হয় ২০ এপ্রিল। আসামীরা প্রকাশ্যে নিজ কর্ম করলেও তাদের গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। বিষয়টি নজরে আনা হলে বুধবার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলজার রহমান ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য নাটোর সদর থানার ওসিকে এই আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ অক্টোবর নাটোর জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অজিত কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে সুমনা সরকার, তার বোন একই হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক (বর্তমানে ফরিদপুরের নাগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত) সাগোরিকা সরকার, তাদের মা করুনা রানী সরকার (৫৬) বাবা সুনিতী রঞ্জন সরকার (৬১) ও তাদের সহযোগী মাসুমের (৫০) বিরুদ্ধে নাটোর সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই সীমানা প্রাচীর না ভাংতে নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও তা অমান্য করে প্রাচীরটি ভেঙ্গে ফেলে আসামীরা। এরপর ওই ঘটনায় বাদী নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা, দায়ের করলে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করেন। ওই আদেশের কপি গত ২০ এপ্রিল নাটোরের পুলিশ সুপার বরাবরও পাঠানো হয়। কিন্তু সদর থানা পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করেনি।
জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মালেক শেখ জানান,তিনি নিজেও বেশ কয়েকবার বিষয়টি মীমাংসার চেস্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন। ওই সীমানা প্রাচীরটি বাদীর জায়গায় এবং বাদীর নিজ খরচে করা। বাদীর বাড়ির পেছনে আসামীদের বাড়ি হওয়ায় তারা ওই প্রাচীর ভেঙ্গে বাড়ি যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করেছে যার মাধ্যমে তারা, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ অমান্য করেছেন।
বাদীর নিযুক্ত আইনজীবী আলী আজগর ও বাদী অজিত কুমার বিশ্বাস জানান, আসামিরা সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় হয়তো এতদিন পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলে বিলম্ব করেছেন। আমরা বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর ৩ জন গ্রেপ্তার হওয়ায় খুশি। অন্যদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার হবে এমন প্রত্যাশা করেন তারা।