বাঘা প্রতিনিধি: শেষ মূহুর্তে কোরবানির পশু কেনার পাশাপশি মাংস কাটার জন্য কাঠের গুড়ি ও সরঞ্জাম কেনার হিড়িক পড়েছে বাঘায়। রোববার(১০ জুলাই) ঈদুল আযহার ঈদকে ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাঘা বাজার এলাকায় কাঠের গুড়ি বিক্রেতা লক্ষন চন্দ্র জানান, তার দোকানে যথেষ্ট পরিমাণ তেঁতুল কাঠের গুড়ি মজুদ রয়েছে। প্রতিদিন গুড়ি বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বিক্রিও বেড়েছে। ছোট গুড়ি ১০০ থেকে ২০০। বড় গুড়ি প্রায় ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
বাঘা পৌর এলাকার বাজু বাঘা গ্রামের বাদশা মিঞা বলেন,‘আমরা নিজেরাই কোববানির পশু জবাই করি। তাই মাংস কাটার জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন হয় কাঠের গুড়ির। গুড়ির ওপর মাংস রেখে তা কাটতে সুবিধা হয়। মাংসকে পরিষ্কারভাবে কাটতে কাঠের গুড়ির বিকল্প নেই। এজন্য প্রত্যেক বছরই নতুন কাঠের গুড়ি কিনি।’
কাঠের গুড়ির পাশাপশি বিক্রি বেড়েছে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম ও মাংস রাখার জন্য পাটি। মাংস রাখার পাটি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকায়।
অন্যদিকে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারশালাগুলোতেও । অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন এলাকায় বসেছে পশু জবাইয়ের নানা সরঞ্জামের দোকান। কোরবানির পশু জবাই থেকে শুরু করে চামড়া ছাড়ানো এবং মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত এসব সরঞ্জাম কেনার জন্য ক্রেতারা ছুটছেন কামারশালা থেকে শুরু করে অস্থায়ী দোকানে। দোকানগুলোতে শোভা পাচ্ছে পশু জবাইয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম।
শুক্রবার (৮জুলাই) উপজেলার বিভিন্ন বাজার গিয়ে দেখা যায়, পছন্দের বিভিন্ন সাইজের দা, ছুরি, বঁটি, চাকু, চাপাতি ও চায়নিজ কুড়াল বেছে নিচ্ছেন ক্রেতারা। লোহার পাশাপাশি স্টিলের তৈরি ছুরি-চাকুরও বেশ চাহিদা রয়েছে।
ক্রেতারা জানান, কোরবানির পশু জবাই ও গোশত বানানোর জন্য তাঁরা সরঞ্জাম কিনছেন। তাঁরা জানিয়েছেন তুলনামূলকভাবে এসব সরঞ্জামের দাম এবার বেশি । পশুর চামড়া আলাদা করার ছুরি (ছোট) ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি ৩০০-৩৫০ টাকা, পশু জবাই করা বড় ছুরি ৫০০ টাকার ওপরে। চাপাতি ৭০০ থেকে হাজার টাকা, লোহার বাঁটঅলা দা ৭-৮শ টাকা, লোহার বঁটি প্রতিপিস সাড়ে ৩শ টাকা, ভোজালি ৫-৬শ থেকে ২ হাজার টাকা এবং হাড় কাটার জন্য চায়নিজ কুড়াল ১ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি এসব সরঞ্জাম কেজি হিসেবেও বিক্রি হচ্ছে। পশুর তেল ছাড়ানোর জন্য প্রতিপিস স্টিলের দাম ৫০ টাকা, শিল-পাথর বঁটিতে ধারের যন্ত্র ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেশি দামের কথা অস্বীকার করে বিক্রেতারা জানান, এ বছর কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে গেলেও আগের মতোই বিক্রি করছেন । তবে অন্য সময়ের চাইতে ঈদে তাদের বিক্রি বেড়েছে। বিক্রেতা দ্বিজেন কর্মকার জানান, সারা বছর এসব জিনিসপত্রের বেচা-বিক্রি কম থাকে। তবে কোরবানির ঈদ এলেই বিক্রি বাড়ে। তিনি জানান, লোহার দাম বাড়লেও আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত বিক্রি বেশি হবে। তবে ব্যবসা অনেকটা কোরবানির পশু বিক্রির ওপর নির্ভরশীল।
কোরবানির পশু যত বেশি বিক্রি হবে, তত বেশি বেচা-বিক্রি হবে। দ্বিজেনসহ অনান্য কর্মকাররা বলেন, ঈদের আগে বেচাকেনায় সংসার চলে না। কোনোমতে দোকান ভাড়া হয়। ভালো মন্দ মিলিয়ে চলছে তাঁদের সংসার
স্ব.বা/ম