বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে রুমি নামের এক গৃহবধূ বিষপাণে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
শনিবার (১৬ জুলাই) বিষপান করলে রাত ৮টায় বাঘা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান স্বজনেরা। গৃহবধূ রুমি বাঘা পৌরসভার মশিদপুর গ্রামের খায়েজ উদ্দীনের মেয়ে।
রোববার সন্ধ্যার আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বিষন্ন মনে পাশে বসে গৃহবধূ রুমির মা মাবিয়া বেগম এবং অনার্স পড়ুয়া মেয়ে রিতু।
অন্যদিকে, ছোট ছেলে আশিক ছোটাছুটি করছে মায়ের চিকিৎসার ঔষধ সংগ্রহের কাজে। কিন্ত, সেখানে দেখা মেলেনি স্বামী আনিসুর রহমানের।
গৃহবধু রুমির মা মাবিয়া জানান, বিশ বছর আগে ৪০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে নাটোরের লালপুর উপজেলার বেরিলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমানের সাথে বিয়ে দেন তারা। একমাত্র মেয়ে রুমির বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে আনিসুর রহমান।
অভাবের সংসারে ৫ হাজার টাকা দেয়া হয় সেই সময়। এর পর থেকে কারণে অকারণে মাঝে মধ্যেই মেয়েকে নির্যাতন করতো জামাই।
শেষে ভিটাবাড়ি ২ কাঠা জমি ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তারা। জমি বিক্রির পুরো টাকাই জামাইকে দেয়া হয়। মেয়ের সুখ শান্তির জন্য নিজের জমি বলতে কিছুই রাখেননি বলে জানান তিনি। কিন্তু এর পরেও থামেনি নির্যাতন।
তিনি আরো জানান, শনিবার রাতে স্বামী নির্যাতন করলে অতিষ্ট হয়ে বিষপাণ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে রুমি । তারপরও যেন অশান্তি দূর হয়।
রুমির মেয়ে রিতু বলেন , অনেক কিছু সহ্য করে আমার মা সংসার করছে। বাবার বেশি বাড়াবাড়িতে কিছু বলতে গেলেই গালাগালি করে।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুবেল আহম্মেদ জানান,পাকস্থলি ধৌত করার পর তাকে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা চলছে। তবে ২৪ ঘন্টা পার না হলে ভালো মন্দ কিছুৃ বলা যাচ্ছেনা।
অভিযোগ অস্বীকার করে আনিসুর রহমান বলেন, বিয়ের পর থেকে সে আমার কথামতো চলাচল করে না। নিজের ইচ্ছামতো চলতে চায়। এনিয়ে সংসারে প্রায়শঃ বাক বিতন্ডা হয়। বিষপাণ করার বিষয়টি রহস্যজনক। জমি বিক্রি করে নিজের এলাকায় জমি নিয়েছি। সব মিলে মনে হচ্ছে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্ব.বা/ম