বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো: আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

রাজনীতি

স্বদেশ বাণী ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নামক রাজনৈতিক শক্তিটির কাছ থেকে জাতি কখনোই দায়িত্বশীল আচরণ পায়নি। বরং তারা সব সময়ই সংকটময় মুহূর্তে জাতির ঐক্যের দুর্গে হানা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পাঁয়তারা করে। শুক্রবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন তিনি।

এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্যকে ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার, উস্কানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারির অভিঘাতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সারা বিশ্বকে একটি সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সব রাজনৈতিক দল দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে বিএনপি নামক রাজনৈতিক শক্তিটির কাছ থেকে জাতি কখনোই দায়িত্বশীল আচরণ পায়নি। বরং তারা সব সময়ই সংকটময় মুহূর্তে জাতির ঐক্যের দুর্গে হানা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পাঁয়তারা করে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো রয়েছে। ঠিক যেমনটি করোনাকালেও ছিল। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণায় যেসব রিপোর্ট উঠে এসেছে সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান যথেষ্ট ভালো। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সরকার কিছু সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয় তখনও সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সফল রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশের ওপর সেই মন্দার প্রভাব পড়েনি। শেখ হাসিনা মানেই সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দানের নেতৃত্ব। শেখ হাসিনা মানেই দুর্যোগে সুযোগ সৃষ্টির কারিগর। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল সংকট সফলভাবে মোকাবিলা করেছে।

তিনি বলেন, সংকট মোকাবিলায় জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসকে নস্যাৎ করতে বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন। জনগণকে কাছে রাখতে না পেরে বিএনপি একটি হতাশাবাদী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত নিরাশার গল্প শুনিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করছে। তারা খুব সচেতনভাবেই এটি করছে যাতে করে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে; সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। একই সঙ্গে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরির পায়তারা করছে। হীন রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টায় শাস্তি প্রিয় মানুষকে আত্মঘাতী করে তোলার মতো দুরভিসন্ধি বিএনপির অর্বাচীন রাজনীতির পরিচায়ক।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপি নেতারা কথায় কথায় বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করে দেশের জনগণের আত্মবিশ্বাস ক্ষুণ্ন করতে চায়। দেশের স্বপ্নবান জনগোষ্ঠীর সামনে বিভ্রান্ত ধোয়া ছড়িয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়। অথচ সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানেন দুটি দেশের অর্থনীতির মৌলিক ভিত্তিই ভিন্ন। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাকে সমান্তরালে রেখে তুলনা করার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, তারা মূল্যস্ফীতি নিয়ে কথা বলছে। মূল্যস্ফীতি হলে জনগণের ওপর চাপ বাড়ে একথা সত্য। সেদিক বিবেচনায় রেখে সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা সরকার সেই মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণ করে ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে রাখে।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের সময় এলেই বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। তাদের বোঝা উচিত জনগণের জন্য কিছু না করে শুধু বাগাড়ম্বর আর বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদান করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতায় আসীন হওয়া যায় না। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই নিজেদের স্বার্থ হাসিলে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে জনগণের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে। অন্যদিকে আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্যও তারা জনগণের সামনে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারছে না। তাই বিএনপি নেতারা জাতির সামনে বিভ্রান্তিকর বক্তৃতা ও বিবৃতি প্রদান করে চলেছে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতি সর্বদা আত্মবিশ্বাসী জাতি। জনগণের আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করা কোনো রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য হতে পারে না। আমি বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাব, সামনের সংকট মোকাবিলার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে বিষেদগার না করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। তাতে দেশের মানুষ উপকৃত হবে এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হবে।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *