রাজশাহীতে ভেজাল সয়াবিন তেলে বাজার সয়লাব, কমেছে ক্রেতা

অর্থনীতি জাতীয় রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: খোলা ভোজ্যতেল সয়াবিনে ভিড়েছে ভেজাল। বাজার খোলা তেলের দামে ও ভেজালে সয়লাব।  সয়াবিন তেলের দাম কমায় ক্রেতারা সময় নেয়নি সয়াবিন তেল যাচাই করার । তেল কিনছেন তা আসল না ভেজালযুক্ত মনে রেখে ক্রয় করেননি । এছাড়াও ভেজাল তেল গরমের সময়  চেনা মুশকিল। । দাম পুষিয়ে নিতে অনেকেই আগের দামে তেল বিক্রি করছেন বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান।

সোমবার (২৫ জুলাই) রাজশাহীর সাহেব বাজার, লক্ষীপুর বাজার, মালদাহ কলোনী, তেরখাদিয়া বাজার সহ নগরীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাড়তি দামে সয়াবিন তেল বিক্রির চিত্র। সেই সাথে কিছু কিছু ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোলা সয়াবিন তেলের মান ও দাম নিয়ে।

যেখানে ১৭ জুলাই রোববার ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দিলেও বাজারে তেলের লিটার প্রতি স্তরভিত্তিক দরকষাকষি চলছে ১৬০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা।  সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ থেকে ১৮২ টাকা লিটার। তবে,এই তেলের মধ্যে পাম ও সুপার তেল মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। একেক দোকানে একেক দাম। বাজার মনিটরিং করলে ভালো হয় বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।

বর্নালী থেকে সাহেব বাজারে আসা বাঁধন নামের একজন জানায়, বাজারে সয়াবিন তেলের বেশ কিছু বড় বড় দোকান আছে। যারা তেল মজুদ করে । তারা এক সময় বেশি দামের আশায় বোতলের তেল খোলা আকারে বিক্রি করেছে।তারা এখন, পুরাতন দামেই তেল বিক্রি করছে। এখনো আমরা ক্রেতারা ৫ থেকে ৭ টা দোকান ঘুরে তেল কিনছি । কিছু লাভের আশায় নয়, ক্রেতাদের সাথে এগুলো প্রতারণা করা হচ্ছে। এরকম জালিয়াতির জন্য বাজার মনিটরিং দরকার। বিএসটিআই অনুমোদিত খোলা সয়াবিন তেল চাই। প্রতিটি দোকানে সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা দেয়া থাকলে ভালো হয়।

তেরখাদিয়া কাঁচা বাজারে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন বলেন, সয়াবিন তেলের এখন অনেক রূপ। পাম, সুপার, লুজ। দেখলাম, লিটার প্রতি সয়াবিন তেল ৩ থেকে ৫ টাকা কম বেশি করে বিক্রি করছেন। অনেকেই বিক্রেতারা বলছেন নতুন রেটের তেল আসেনি। তাই পুরাতন রেটে পুরাতন তেল বিক্রি করছেন।এ ছাড়া বাজারে সরিষার তেল ২২০ টাকা, সয়াবিন ১৮৫ টাকা, সয়াবিন খোলা (ভালো) ১৮০ টাকা। এছাড়া ভেজাল যুক্ত সয়াবিন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ক্রেতাদের সংখ্যা কম বলে জানাচ্ছেন রঞ্জন ট্রেডার্সের কর্মচারীরা। তারা জানান, দাম যখন বেড়ে গিয়েছিল তখন ক্রেতার সংখ্যা বেশি ছিল। এখন সব সময় তেল হাতের নাগালে পাচ্ছেন ক্রেতারা তাই ক্রেতা কমে গেছে।বাণিজ্য সচিবের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৮৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৬ টাকা, এবং পাম তেল ১৫২ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিক্রেতা জানান, এখন ডিপোর মালিক ও সাধারণ দোকানিরা ব্যবসা করবে ক্রেতাদের সাথে। তেলের পর্ব অনেকটা নিশ্চুপ। তবে, তেলের দাম বৃদ্ধির উসিলায় যেগুলো খাবার যেমন সামান্যতম সিঙ্গাড়া, পিয়াজু, পুরি, মোগলাই, চা সহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি করছে, তারা এখন কি করবে তেলের দাম তো কমে গেছে। এখন সেগুলোর দাম কমিয়ে দিক।

দাম বাড়লেই সব কিছুর দাম বাড়ছে। শুধূ তেল নয় সব দিকেই প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন তাহলের হুজুগে বাঙালী নাম আর থাকবে না।

উল্লেখ্য যে, গত ২৬ জুন মন্ত্রণালয় ও মিল মালিকদের যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৯৯ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা এবং পাম তেলের দর ১৫৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ জুন পর্যন্ত চলতি বছরে তিন দফায় লিটারপ্রতি ৫৫ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। এরপর ২৬ জুন বোতলজাত সয়াবিন লিটারে ছয় টাকা এবং রোববার ১৭ জুলাই ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা আসে।

স্ব.বা/ম

 

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *