বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় পদ্মার পাড় ধসে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া মজা মাঝির মরদেহ উদ্ধার হয়নি। শুক্রবার(২৬ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নদীতে তল্লাশি চালিয়েও ৬২ বছরের বৃদ্ধ মজা মাঝিকে উদ্ধার করতে পারেননি নৌ পুলিশ । নৌকা ম্যানেজ করে দিতে না পারায় ফিরে গেছে ফায়ার সার্ভিস।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগষ্ট) দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার চকরাজাপুর চর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া এলাকায় পদ্মার পাড় ধসে নদীতে তলিয়ে যায়। তখন শ্রমিক মজামাঝি নিখোঁজ হন। সে চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলী মাঝির ছেলে। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর আব্দুর রহমান জানান, ভাঙনের কবলে পড়ে ১৫ দিন আগে মজা মাঝিসহ আরো কয়েকজনের বাড়ি সরিয়ে নিয়েছে। তাদের বসতভিটা এখন নদীর গর্ভে। সেখানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার দিন পদ্মার পাড়ে গিয়ে ভাঙন দেখছিলেন মজা মাঝি। ওই সময় পদ্মা পাড়ের মাটি ধসের সাথে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। পরে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও বাঘা থানায় জানানো হয়।
স্থানীয় আওলাদ দেওয়ান জানান,তাকে নদীর পাড়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখছিলেন। কিছুক্ষন পরে মাটির চাপ ভেঙে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। সেখানকার মুদি ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম জানান, নৌকা ও জাল নিয়ে খোঁজা খুঁজি করে সন্ধান মেলাতে পারেননি। পাঁড় ধসে নদীতে পড়ে মারা যাওয়া মজা মাঝি একজন দরিদ্র মানুষ। তার মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেটা শারিরিক প্রতিবন্ধী। তার মৃত্যুতে বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী।
চারঘাটের নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নদীতে তল্লাশি চালিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিসের সাব অফিসার নুরন্নবী বলেন,উদ্ধার কাজে তার টিম নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে নৌকা ম্যানেজ করে দিতে না পারায় চলে এসেছি। তবে অনুমান করা গেছে,নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তি নদীতে পড়ার সাথে সাথে স্রোতে ভেসে গেছে।
সরেজমিন নৌকাযোগে চৌমাদিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,নিখোঁজ মজা মাঝির স্ত্রী মজিরন ও ছেলে ইসরাত আলী ও স্বজনদের আহাজারি। মরদেহ সন্ধানের অপেক্ষায় আছেন চৌমাদিয়া গ্রামের নারি-পুরষেরা। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ডিএম বাবুল মনোয়ার জানান, আগে থেকেই কম বেশি ভাঙন চলছিল। বর্তমানে পানি বৃদ্ধির সাথে ভাঙ্গন বেশি আকার ধারন করেছে। সেই ভাঙনে পদ্মা পাড়ের মাটি ধসের সাথে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন মজা মাঝি ।
শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান বাঘা উপজেলা নির্বাহি অফিসার শারমিন আখতার। তিনি বলেন,মরদেহ উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসকে বলেছি। শনিবার তারা আসবেন বলে জানিয়েছেন। তারা আসলে উদ্ধার কাজে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও দরিদ্র পরিবারকেও সহযোগিতা করা হবে বলে জানান নির্বাহি অফিসার।
স্ব.বা/ম