তানোরে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত শিশু ওমরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু 

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: অবশেষে সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিক আহত শিশু ওমরের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালের দিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সবাইকে কাদিয়ে জ্ঞানশূন্য অবস্থায় মারা যান শিশু ওমর। গত সোমবার সকালের দিকে তানোর পৌর সদর  গুবিরপাড়া গ্রামের মোড়ে সড়ক দূর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন ৫ বছরের শিশু ওমর। দীর্ঘ প্রায় ২৪ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সবাইকে কাদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে ওমরের নানির বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার কুযিশহর গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে শিশু ওমরের মরদেহ বহনকারী এম্বুলেন্স গুবিরপাড়া মোড়ে আসা মাত্রই তার খালাসহ গ্রামের মহিলা পুরুষ দেখার জন্য আসলে সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কোন ভাবেই এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না ওমরের নানি ও পিতা মাতা এবং স্বজনরা। সেই সাথে ঘাতক বাইক চালক ধানতৈড় গ্রামের হাজী শৈয়বের উড়ন্ত ছেলের শাস্তির দাবিতে ফুসে উঠেছেন স্থানীয়রা। কারন মুজাহিদের বাইক চালানো বেপরোয়া এর আগেও গুবিরপাড়া গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক মুস্তাকিমের ছেলেকে ধাক্কা মেরে পা হাত ভেঙ্গে ফেলেন। সোমবার খবরের শিরোনাম ছিল নানির সাথে খালার বাড়ির পরিবর্তে হাসপাতালে শিশু ওমর। তার এমন অকাল মৃত্যু ও মরদেহ নানির গ্রামে আসামাত্রই কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, গত ১৪ নভেম্বর সোমবার সকালের দিকে শিশু ওমরকে নিয়ে তার নানি কুযিশহর গ্রাম থেকে গুবিরপাড়া গ্রামে শিশুটির খালার বাড়িতে ভ্যান যোগে মোড়ে নামা মাত্রই ধানতৈড় গ্রামের সার কীটনাশক ব্যবসায়ী হাজী শৈয়বের বখাটে ছেলে মুজাহিদ বিপরীত দিকে থেকে দ্রুত গতিতে আরওয়ান সুজকি হুলুদ কালারের মটরসাইকেল জোরে ধাক্কা দেয়। সাথে সাথে মাথা ফেটে মগজ দেখা যাচ্ছিল। বাইকে ধাক্কা লাগার সাথে সাথে শিশু ওমর চিৎকার দিয়ে নুড়ে পড়েন। এঅবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে অবস্থা বেগতিক দেখে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
পাড়ার বেশকিছু মহিলারা জানান, মুজাহিদ বেপরোয়া বাইক চালক। তার খামখেয়ালীতেই দরিদ্র শিশু ওমর মারা গেল। চিকিসাও অবহেলা করেছে মুজাহিদের পিতা। সময় মত রক্ত দিতে পারেনি। এসব লোকাল রাস্তায় এতো জোরে মটরসাইকেল কেন চালাতে হবে। এর আগেও কয়েকবার দূর্ঘটনা ঘটায়।
তবে মুজাহিদ জানান, আমি তানোর থেকে ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে আসার পথে গুবিরপাড়া মোড়ে ভ্যান থেকে নেমেই শিশুটি দৌড় দিয়ে রাস্তাপার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলের সাথে ধাক্কা লাগে।
হাজি শৈয়বের একান্ত এক সহযোগী জানান, দুপুরের আগে শিশু ওমরের আত্মীয় স্বজনরা এসেছিল, তাদেরকে বলা হয়েছে লাশ দাফন করেন দশজনে যেটাই বলবে সেটাই করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরের আগে তানোর পৌর সদর তানোর টু তালন্দ রাস্তার গুবিরপাড়া মোড়ে বাবু সরদারের শ্বাশুড়ী তার নাতি ওমরকে নিয়ে মোড়ে ভ্যান থেকে নামে। রাস্তা পার হওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে মুজাহিদ প্রচন্ড গতিবেগে বাইক চালিয়ে আসছিল। এঅবস্থায় বাইকের হ্যান্ডেলের সাথে শিশু ওমরের  জোরে ধাক্কা লাগে।
শিশু ওমরের পিতার নাম লিটন, বাড়ী রাজশাহী শহরে। কিন্তু ওমর কে ছোট অবস্থায় নানি এনে দেখাশোনা করেন। অভিভাবক বলতে তার নানিই সবকিছু। তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, দূর্ঘটনা সম্পর্কে অজানা।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *