দক্ষিণ সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের মৃত ওয়াছির আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের হত্যায় পরিবারে এখনো থামেনি কান্না। শোকের মাতম বিরাজ করছে চারিদিকে। পরিবার পরিজনের কান্নায় যেন কাদছে পুরো জাহান। ছেলে হারা মায়ের এমন আর্তনাদ যেন থামছেই না। পরিবারের পাশাপাশি আনোয়ারের হত্যায় এলাকার মানুষের দাগ কেটেছে নিদারুন ভাবে।
এলাকাবাসী সহ পরিবারের দাবী আনোয়ারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করে এখন আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে হত্যা কারীরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আনোয়ারের পরিবারের মানুষ এখন পাগলপ্রায়। ছেলে হারানোর ব্যথায় কাতর মা। শুধু পরিবার নয় এলাকার মানুষের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক থাকায় আনোয়ারের এই হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারছেন কেউ। এলাকাজুড়ে একটাই গুঞ্জন আর দাবী দ্রুত যেন আনোয়ারের হত্যায় জড়িত খুনিদের বিচারের আওতায় আনা হয়।
তার পরিবার জানান, এ বছর কাপনা নদী (চনুগাং) সরকারিভাবে লিজ আনায় শাহাবুদ্দিন ও এলাইছ আনোয়ারের পিছনে লাগে। গত কয়েকদিন আগেও শাহাবুদ্দিন আনোয়ারের সাথে এ নিয়ে ঝগড়া বিবাদ করেছে। পরিবারের দাবী এই বিল লিজ আনার সূত্র ধরেই থাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সমাজসেবক ও যুবলীগ নেতা আনোয়ারের হত্যা শোকে ভেঙ্গে পড়েছেন আশপাশ গ্রাম সহ পুরো উপজেলার মানুষ। আনোয়ারের লাশ উদ্ধারের পর তার শরীরের কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্নও রক্ত দেখেছেন বলেও দাবী করছেন পরিবারের লোকজন। পুলিশ মামলা না নেয়ায় নানা প্রশ্ন বিরাজ করছে উপজেলাজুড়ে। গত সোমবার বিকেল ৩টায় সুনামগঞ্জ থেকে তার লাশ দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি চানপুর নিয়ে আসলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এলাকার তরুণ সমাজসেবক আনোয়ারের লাশ দেখে স্বজন ছাড়াও আশপাশ গ্রামের মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বাদ আছর চানপুর ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
আনোয়ারের মা রুপতেরা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। শাহাব উদ্দিন আমার ছেলেকে হত্যা করে নাটক সাজিয়েছে। হত্যার আগে আমার ছেলেকে ফোন দিয়ে নিয়ে যায় শাহাব উদ্দিন ও এলাইছ সহ সঙ্গীয় কয়েকজন। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা রাত ১০ টায় এসে আমার ছেলের কাছে থাকা ২১ হাজার টাকা দিতে আসে, আমি জিজ্ঞেস করলে বলে তোমার ছেলে আসতেছে। কিন্তু আমার ছেলে আর ফিরলো না। এতে করেই বুঝা যায় আমার ছেলেকে হত্যা করে আমার কাছে এসে নাটক সাজিয়েছে। শাহাবুদ্দিন সহ আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই। আনোয়ারের চাচাত ভাই ছমরু মিয়া দাবী করেন, বাজার থেকে বাড়ি আসার পথে রাতের বেলা তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে শাহাবুদ্দিন ও তার সঙ্গীরা। লাশ উদ্ধারের পর তার শরীরের কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্নও রক্ত দেখেছেন তারা।
এ ব্যাপারে ছাতক থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর পরিষ্কার হওয়া যাবে। আর পুলিশ সদস্যের অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্ব.বা/শা