শিক্ষক নির্ভর তানোর আওয়ামী লীগের রাজনীতি 

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: শিক্ষক নির্ভর হয়ে পড়েছে রাজশাহীর তানোর আওয়ামী লীগের রাজনীতি। উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভায় নতুন রুপে যে সব কমিটি করা হয়েছে তাতে শিক্ষকদের বেশি প্রধান্য দেয়া হয়েছে।  প্রায় কমিটিতে শিক্ষকরা হয় সভাপতি না হয় সম্পাদক হয়েছেন। পদ পেয়ে শিক্ষকরাও নিজ প্রতিষ্ঠানে তেমন ভাবে থাকছেন না বলেও অহরহ অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সময় ব্যয় না করে রাজনীতির সভাকেই অধিক গুরুত্ব দেয়া শুরু করেছেন। এতে করে শিক্ষক দের এমন রাজনীতি মূখর কর্মকান্ডের কারনে পাঠদানেও হযবরল সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শিক্ষকদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আগে গুরুত্ব দিতে হবে তারপরও রাজনীতি না সমাজনীতি সেটা ব্যক্তিগত বিষয় বলেও অভিমত শিক্ষা বিদদের।
জানা গেছে, উপজেলা আ”লীগের কমিটি এক বছর অতিবাহিত হলেও অনুমোদন পায়নি। কমিটিতে সাধারন সম্পাদক করা হয় একে সরকার সরকারি কলেজের প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার কে। যা সম্পূর্ণ রুপে বিধি বহির্ভূত। কারন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে রাজনৈতিক দলের পদে থাকা যায় না।উপজেলা কমিটিতে যুগ্ন সম্পাদক করা হয়েছে চাপড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান কে।তিনি তানোর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। দপ্তর সম্পাদক করা হয়েছে মহিলা কলেজের প্রভাষক মুনসেফ আলী কে। এছাড়াও কমিটিতে আছেন চাপড়া মহিলা কলেজের অধ্যাক্ষ অনুকূল কুমার ঘোষ। তবে এক বছরেও পূর্নাঙ্গ কমিটির ঘোষণা হয়নি বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
এদিকে চলতি বছরের জুলাই মাসে পূর্ব ও পশ্চিম শাখা করে কলমা ইউনিয়নের কমিটি দেয়া হয়। পূর্বের সম্পাদক করা হয় চন্দনকোঠা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে। পশ্চিমের সভাপতি করা হয় প্রধান শিক্ষক মুনসুর রহমান কে। সরনজাই ইউনিয়নের সভাপতি করা হয় সরনজাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নানকে। তানোর পৌর সভাপতি করা হয় আকচা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দিন কে। বাধাইড় ইউপির সম্পাদক করা হয় শিক্ষক রবিউল ইসলাম কে।
এর আগে উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি করা হয় পারিশো দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম কমল সাহা কে। তিনি উপজেলা আ”লীগের যুগ্ন সম্পাদক ছিলেন। আ”লীগ থেকে কিভাবে কৃষকলীগের সভাপতি পদে আসেন সেটা নিয়েও সিনিয়র নেতারা বিব্রত।
একাধিক সিনিয়র নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে, তারপরও উপজেলা কমিটি অনুমোদন করতে পারেন নি। তাহলে অনুমোদন হীন কমিটি কিভাবে ইউনিয়ন ও পৌরসভার পূর্বের কমিটি ভেঙ্গে নতুন করে কমিটি কার ইশারায় করলেন। দলীয় গঠনতন্ত্র, দলীয় সংবিধান কোন কিছুকেই পরোয়া করছেন না। এভাবে একক আধিপত্য নিয়ে সবকিছু করা সঠিক না। এসব কমিটি করতে গিয়ে নতুন রুপে দলে গ্রুপিং শুরু হয়েছে। এটা দলের জন্য মারাত্মক ক্ষতি কর। আগামী নির্বাচন কে সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী করতে গিয়ে হিতে বিপরীত অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। যারা নতুন ভাবে পদে এসেছেন তারা কত জনপ্রিয় সেটাতো বোঝাই যাচ্ছে।
সাবেক সভাপতি বর্তমান জেলা আ”লীগের সদস্য মনোনায়ন প্রত্যাশী গোলাম রাব্বানী বলেন, আমার তো মনে হয় নিজ বলায় তৈরি করার জন্যই এমন কাল্পনিক কমিটি করেছে।যেখানে উপজেলা কমিটি অনুমোদন হয়নি, সেখানে কি করে ইউনিয়ন ও পৌরসভা এবং ওয়ার্ডের কমিটি করেন। ক্ষমতা থাকলেই যে সবকিছু নিজের ইচ্ছায় পরিচালনা করতে হবে কে বলেছে। এসব কমিটিই হয়তো এক সময় দলের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হতে পারে।
জেলা আ”লীগের সভাপতি অনিল কুমার বলেন, উপজেলা কমিটি এখনো অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন হীন কমিটি কিভাবে ইউনিয়ন ও পৌর এবং ওয়ার্ডের কমিটি করেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আগামীতে জাতীয় নির্বাচন দলকে শক্তিশালী করতে এসব কমিটি করছেন বলে শুনেছি। তবে এখনো উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভার কমিটি অনুমোদন পায়নি। তাঁরা কি এভাবে কমিটি করতে পারে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদক কে তো আমরাই নির্বাচিত করেছি,নির্বাচন কে সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী করার জন্য এধরণের কমিটি করছেন বলে শুনেছি।
স্ব.বা/বা
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *