তানোরে বছর না যেতেই দেবে ফেটে গেছে কোটি টাকার পাকা রাস্তা  

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি: বছর না যেতেই প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ভাবে কার্পেটিং  রাস্তা বসেও গেছে এবং ব্যাপক হারে ফেটেও গেছে। রাজশাহীর তানোর টু চৌবাড়িয়া রাস্তার ধানতৈড় মোড় ও মাদারিপুর বাজারে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে আছে। কাজ শুরুর সময় একেবারেই নিম্নমানের সামগ্রী দেয়ার কারনেই এভাবে দেবে ও ফেটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এতে করে দ্রুত দেবে যাওয়া রাস্তটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করার দাবি তুলেছেন। নচেৎ জায়গাটিতে ভয়াবহ গর্তের সৃষ্টি হবে, ঘটবে ছোট বড় দূর্ঘটনা।
জানা গেছে, গত বছরের শেষের দিকে তানোর উপজেলা পরিষদ থেকে চৌবাড়িয়া পর্যন্ত ১০.১৪ কিলোমিটার রাস্তাটি নতুন ভাবে কার্পেটিং করা হয়। যদিও চাপড় থেকে চৌবাড়িয়া পর্যন্ত এজিং ডাবলু, বিএম ও প্রাইম বোর্ড করে কার্পেটিং করা হয়। কিন্তু উপজেলা পরিষদ থেকে চাপড় পর্যন্ত হ্যারো ট্যাক্টর দিয়ে পুরাতন রাস্তা উল্টিয়ে কয়েকদিন রাখার পরে পিচ দিয়ে কার্পেটিং করা হয়। যার কারনেই অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তার অবস্থা বেগতিক হয়ে পড়েছে।
সুত্রে জানা যায়, লোকাল গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট (আরসিআইপি)। অর্থায়নে এডিবি এন্ড গোভোর্মেন অফ বাংলাদেশ (জিওবি)। রোর্ড আইডি ১৮১৯৪২০০২। কাজের ওয়ারকাডার দেয়া হয় ২০২০ সালের ৩০ আগস্টে। ঠিকাদারের নাম দেয়া আছে মইনদ্দিন বাসী লিমিটেড, মানেজিং ডিরেক্টর মইনদ্দিন ( বাসী)। ঠিকানা দেয়া আছে ০৭ এইচএমএম রোড, ডোরটানা, যশোর ৭৪০০ যশোর। কাজের বরাদ্দ  ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪৬ টাকা।
কার্যাদেশ মইনদ্দিন পেলেও রাস্তার কাজ করেন রাজশাহী শহরের ঠিকাদার ওয়াসিম।
স্থানীয় ঠিকাদারেরা জানান, কাজটি মইনদ্দিন পেলেও অগ্রিম লাভ দিয়ে ওয়াসিম কিনে করেছেন। যে কোন কাজ কিনে করলে প্রচুর অনিয়ম করতে হয়। তাছাড়া কোন ভাবেই কাজ করতে পারবেনা। রাস্তার দু’ধারে ঘাস লাগাতে হবে। কিন্তু ওয়াসিম কোন ধরনের ঘাষ লাগায়নি। মাঝে মাঝে উর্ধ্বতন কর্মকতারা রাস্তা পরিদর্শনে এলে যে সব জায়গা ভালো আছে সেগুলো দেখিয়ে এবং ভালো মানের আপ্যায়ন করে বিদায় দিয়ে থাকেন ঠিকাদার ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। কার্যাদেশ ২০২০ সালে পেলেও করোনার দোহায়ে অনেক দেরিতে কাজ করেন। যখন কাজ শুরু করেন তখন কাজের মালামালের দাম অনেক বাড়তি। এমন খোড়া অজুহাতে প্রতিটি রাস্তার কাজ অনিয়ম করে করা হয়েছে।
ধানতৈড় মোড়ের ব্যবসায়ীরা জানান, পুরাতন রাস্তা উল্টিয়ে রোলার মেরে কার্পেটিং করা হয়েছে। কোন ধরনের খোয়া বালু কিছুই দেয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধানতৈড় মোড়ের জসিমের বালাইনাশকের দোকানের সামনে ও রাস্তার পশ্চিমে ৪/৫ হাত জায়গা দেবে গেছে এবং ব্যাপকহারে ফাটল ধরেছে। পশ্চিম দিকের দেবে যাওয়া জায়গাই উঁচু হয়ে আছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, রাস্তা নির্মানের শুরুতে ব্যাপক অনিয়ম করে। কোন ধরনের নতুন মালামাল দেয়া হয়নি। ওই জায়গা খনন করে বালু খোয়া দেয়ার কথা আমরা বলেছিলাম। কিন্তু তারা সাব জানিয়ে দিয়েছিল রাস্তা হচ্ছে শুকরিয়া আদায় করেন।
কাজ করা ঠিকাদার ওয়াসিম বলেন, রাস্তার কাজ শেষ করতে পেরেছি এটাই অনেক কিছু। রাস্তা তো সারা জীবন রাস্তা টিকসই হবে কে বলেছে বলেও দাম্ভিকতা দেখান তিনি। উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, নতুন ভাবে নির্মান করা রাস্তা যেখানেই দেবে যাবে বা ফাটলের সৃষ্টি হবে সেখানেই মেরামত করা হবে বলে দায় সারেন তিনি।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *