নড়াইলের দেশীয় প্রজাতির মাছের শুঁটকি চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বাইরে!

চারণ সংবাদ

উজ্জ্বল রায়,নড়াইল: নড়াইলের দেশীয় প্রজাতির মাছের শুঁটকি বিভিন্ন জেলায় সরবরাহের পাশাপাশি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। প্রতি মৌসুমে প্রায় দুই কোটি টাকার শুঁটকি মাছ বেচাকেনা হয় এ জেলায়। শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে ভালো লাভ হওয়ায় বাণ্যিজিকভাবে বাড়ছে এর পরিধি। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, জানাগেছে, খাল-বিল, নদী-নালা সমৃদ্ধ নড়াইলে রয়েছে দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক ভান্ডার।

বিল ইচ্ছামতি, শলুয়া, চাঁচুড়ী, আড়ংগাছা, নলামারা বিলসহ বেশ কিছু বিল এবং বাড়িভাঙ্গা, ধোপাদাহ সহ বেশ কয়েকটি খালে কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত প্রচুর দেশীয় প্রজাতির পুঁটি, টেংরা, শোলসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে। এসব মাছ নড়াইলের চাহিদা মিটিয়ে পাশ্ববর্তী জেলাতে সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি নড়াইল সদর উপজেলার হোগলাডাঙ্গা, মাইজপাড়া, লোহাগড়া উপজেলার চরব্রাহ্মণডাঙ্গা সহ কয়েকটি স্থানে গড়ে ওঠা শুঁটকি পল্লীতে কোন প্রকার ঔষুধ ছাড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবেই মাছের শুঁটকি করা হয়। বিগত ৮/১০ বছর ধরে মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও মাগুরা জেলা থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা এসে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু করেন। এখানকার শুঁটকি পল্লী চাতাল থেকে মৌসুমে বেশ কয়েকটি চালানে ৩ হাজারের অধিক মণ শুঁটকি মাছ দেশের বিভিন্ন জেলাসহ ব্রাক্ষণবাড়িয়া হয়ে ভারতে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশে শুঁটকি রপ্তানি হয়।

এ খাতে মৌসুমে প্রায় দুই কোটি টাকার লেনদেন হয়। শুঁটকি ব্যবসায়ী মিরাজ জানান, শুঁটকিতে লাভ ভালোই হয়। নড়াইল জেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এসব মাছ মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে কিনে শুঁটকি করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়া ভারতেও রফতানি হয় এসব শুঁটকি মাছ। শুঁটকি ব্যবসায়ী রবীন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, রোদে শুকানো এসব শুঁটকি মাছে কোন ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। মাঠের মধ্যে শুঁটকি খোলায় রোদের কোনো সমস্যা হয় না। তবে নিম্নচাপ হলে তখন বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। মাঝে মধ্যে আথিক সমস্যার জন্য শুঁটকি ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

সরকার যদি স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মাছ সংরক্ষণের (শুঁটকি) ফলে প্রান্তিক জেলেরা মাছের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় মা মাছ নিধন বন্ধ করতে পারলে এবং অভয়াশ্রম স্থাপন করতে পারলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বৃদ্ধি পাবে এবং আর্থিকভাবেও মৎস্যজীবীরা লাভবান হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *