গণপরিবহন সংকটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, বিমানবন্দর সড়কের দুপাশ বন্ধ

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  গণপরিবহন সংকট এবং সরকারের বাস ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক আটকিয়ে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে অফিসগামী যাত্রীরা রাজধানীর খিলক্ষেতে বিমানবন্দর সড়কের দুপাশে অবস্থান নেন।  এ সময় সড়কের দুদিকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।  বাস থেকে যাত্রীরা সড়কে নেমে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টপেজে দাঁড়িয়ে থেকে বাসে উঠা যাচ্ছে না।  বাসের দরজা বন্ধ।  একদিনে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে অন্যদিকে শত চেষ্টা করেও বাসে সিট পাওয়া যাচ্ছে না। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই।  এর স্থায়ী সমাধান চাচ্ছেন  যাত্রীরা।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, খিলক্ষেত সড়কের দুপাশ বন্ধ।  সহস্রাধিক যাত্রী সড়কে অবস্থান নিয়ে আছেন।  তাদের বেশিরভাগই অফিসগামী।  সড়কের দুপাশে সারি সারি গাড়ি।  গাড়িতে থাকা যাত্রীরাও নেমে এসেছেন রাস্তায়।  ট্রাফিক পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তারেক জানান, বুধবার থেকে এই দুর্ভোগ শুরু হয়েছে।  আজকেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাওয়া যাচ্ছে না।  এদিকে অফিসে প্রবেশের সময় চলে যাচ্ছে।  এই দুর্ভোগ প্রতিদিন মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।  এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান তারা।

আরেক অফিসগামী রিজওয়ান জানান, একদিকে সড়কে এসে বাস পাওয়া যাচ্ছে না।  অন্যদিকে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।  আবার অফিসও বন্ধ হচ্ছে না।

রিজওয়ানের ভাষায়, ‘অফিস চালু রেখে বাসে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি।  এতে স্বাস্থ্যবিধিও মানা সম্ভব হবে না।  আবার জনগণের দুর্ভোগেরও শেষ নেই। ’

রোবায়েত নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে এভাবে সাধারণ মানুষের পকেট কাটার কোনো মানে হয় না।  সরকার যদি মনে করে মুভমেন্ট কমানো উচিত সেক্ষেত্রে অফিস আদালত বন্ধ করে দিক।  অফিস চালু রেখে গণপরিবহনে সিট কমিয়ে দেওয়া কোনো যৌক্তিক সমাধান নয়।

এদিকে ট্রাফিক পুলিশ বিক্ষোভাকারী সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন।  কিন্তু বিক্ষোভকারীরা কিছুতেই সড়ক ছাড়ছেন না।  এ নিয়ে তাদের সঙ্গে ট্রাফিকের বাতবিতন্ডাও হচ্ছে।

ট্রাফিকের পিআই লিটন বলেন, বুধবার আমরা বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।  আজও সকালে চেষ্টা করেছি।  কিন্তু গণপরিবহনের সিটের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা বেশি।  তাই অনেকেই বাসে উঠতে না পেরে বিক্ষোভ করছেন।  আমরা ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।  কিন্তু তারা সড়ক ছাড়ছেন না।  এই সমস্যার সমাধান তো আমাদের হাতে নেই।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ট্রাফিকের এডিসি বদরুল যুগান্তরকে বলেন, ঘণ্টাখানেক ধরে সড়ক বন্ধ।  আমরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে সড়কে যান চলাচল চালুর চেষ্টা করছি।

প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বুধবার থেকে গণপরিবহনগুলো ধারণ ক্ষমতার শতকরা ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দেয় সরকার।  এক্ষেত্রে যাত্রীদের ভাড়া গুণতে হচ্ছে ৬০ শতাংশ বেশি।

গণপরিবহণে যাত্রী সংখ্যা হ্রাস এবং ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করার সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না যাত্রী সাধারণ।  যাত্রীরা গণপরিবহন না পেয়ে দুদিন ধরে সড়কে বিক্ষোভ করছেন।  অনেকে বাস না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *