রেলিং সম্পন্ন, পদ্মা সেতুতে বসছে ল্যাম্পপোস্ট

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক :  বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার স্মারক পদ্মা সেতু এখন চালু হওয়ার অপেক্ষায়। স্বপ্নের সেতু এখন চালুর প্রহর গুণছে। সেতুর দুইপাশের রেলিং-প্যারপেট ওয়াল ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মূল সেতু ও সংযোগ সেতুসহ মাওয়া থেকে জাজিরা পর্যন্ত শোভা ছড়াচ্ছে প্যারাপেট ওয়াল। এবার শুরু হয়েছে ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের কাজ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ভায়াডাক্ট বা সংযোগ সেতুর এস৭ ও এস৮ নম্বর খুঁটির মধ্যবর্তী স্থানে স্টিলের তৈরি ল্যাম্পপোস্টের মূল কাঠামো স্থাপন শুরু হয়। আর প্রথম দিনই আটটি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া প্রান্তের দক্ষিণ পাশের সংযোগ সেতুর এস১ নম্বর থেকে এস৮ নম্বর খুঁটি পর্যন্ত এই ৮টি ল্যাম্প পোস্ট বসে। ক্রেনে করে এই ল্যাম্প পোস্ট উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে বসানো হয়।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুর রহমান জানান, এসব কাঠামো চীন থেকে আনা হয়েছে। প্রায় ১৫ দিন আগে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে সড়ক পথে পদ্মা সেতুর মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে ৯৫টি ল্যাম্পপোস্টের কাঠামো নিয়ে আসা হয়।

তিনি আরও জানান, সংযোগ সেতুসহ পুরো সেতুতে মোট ৪১৬টি ল্যাম্পপোস্ট বসবে। এর মধ্যে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতুতে ৩২৮টি এবং দুই প্রান্তের সংযোগ সেতুতে বসবে ৮৮টি ল্যাম্পপোস্ট। সেতুর মাওয়া প্রান্তের সংযোগ সেতুর যে পথ ধরে যানবাহন নামবে সে পথে বসানো হবে ২০টি ল্যাম্পপোস্ট। আর মাওয়া প্রান্তের যে পথে যানবাহন উঠবে সেখানে স্থাপন হবে ২২টি ল্যাম্পপোস্ট। অন্যদিকে, সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যানবাহন নামার পথে ২৪ টি ও ওঠার পথে ২২টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হবে।

 

তিনি আরও জানান, ল্যাম্পপোস্ট বসানোর জন্য ৪১৬টি লাইটিং ব্লিস্টার সেগমেন্ট ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এখন শুধু বসানো বাকি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন ১০টি করে ল্যাম্পপোস্ট বসানো সম্ভব হলে দেড় থেকে দুই মাসে পুরো সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট বসে যাবে। এই ল্যাম্প পোস্ট থেকেই পদ্মা সেতুকে রাতে আলোকিত রাখবে।

এদিকে রেলিং বসানো শেষ হয়েছে। পুরো পদ্মা সেতু জুড়েই এখন রেলিং। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু মুভমেন্ট জয়েন্টের জন্য কয়েকটি বসানো হয়নি। তাদের হিসাবে বুধবারই রেলিং-প্যারাপেট ওয়াল বসানো শেষ। ১৮শ’ ৪ মিলিমিটার দীর্ঘ ১৫শ’ মিলি মিটার প্রস্ত, ১০০ মিলি মিটারর পুরুত্বের সিমেন্টের তৈরি প্রতিটি প্যারাপেট ওয়ালই ক্রেনের করে বসিয়ে দেয়া হয়।

সেতুর ১২ হাজার ৩৯০টি প্যারাপেট ওয়ালের বসানো বাকী মাত্র ১৯২টি। পুরো সেতু জুড়েই প্যারাপেট। এদিকে মূল সেতুর মাঝখানে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ডিভাইডারের মধ্যে বাকী রয়েছে মাত্র ২শ’ মিটার।

আর সড়ক পথে চলছে কার্পেটিং। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে পদ্মা সেতুর সড়ক পথের পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ওয়াটার প্রুভ লেয়ারের উপর প্রথম পর্যায়ে ৬০ মিলিমিটার পুরুত্বে পিচ ঢালাই হচ্ছে। এর উপর আর ৪০ মিলি মিটার থিকনেসের আরেকটি লেয়ার দেয়া হবে। ব্ল্যাকটপ হবে ১০০ মিলি মিটার পুরত্বের। আর নিচ তলায় রেলের পূর্ব পাশেই পুরোদমে বসছে গ্যাস লাইন। সেতুর এখন সম্পন্ন হওযার দ্বার প্রান্তে।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক  বলেন, আগামী ৩০ জুন পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার টার্গেট নিয়েই এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।

সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৮৯ এবং মূল সেতুর ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৩০ জুন সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
সূত্র : বাসস

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *