কয়রায়  সড়ক নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ 

জাতীয় লীড
খুলনা জেলা প্রতিনিধি: খুলনার কয়রা উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) ৯৪ লক্ষ টাকার রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করে রাস্তা পাকাকরণ সহ ৫ লক্ষ টাকায় রাস্তার কাজটি বিক্রি  করার অভিযোগ উঠেছে মুল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীর আলম আলমের বিরুদ্ধে। চলতি বছরের  ৩১ মে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ করতে পারিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে জনগণের  ভোগান্তি চরমে। এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি দাবি এলাকাবাসীর। এলজিইডি বলছে নিম্মমানের মালামাল অপসারণের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রকৃত ঠিকাদার কাজ না করে টাকার বিনিময়ে হারুন নামে একজনকে কাজটি বিক্রি করে দেন। এতে এলজিইডির লোকজনকে ম্যানেজ করে টাকায় কেনা রাস্তার কাজটিতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার সহজ হয়েছে নতুন ঠিকাদারের জন্য। এলাকাবাসীর আশঙ্কা অল্প দিনের মধ্যে রাস্তাটি ভেঙ্গে ও কার্পেটিং উঠে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।  এছাড়া রাস্তায় ৮১ মিটার প্লাসাইডিং থাকলেও সম্পূর্ণ না করেই রাস্তার কাজ শুরু করে।
কয়রা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেউদিয়া বাজার ইউপি-সুতি বাজার সড়ক  এলাকার দেউলিয়া বাজার হতে সরকারী পুকুড় পাড় মোড় পর্যন্ত (চেইঃ ০০-২৩২৫ মিঃ) পূর্নবাসন পাকাকরণ কাজের দরপত্র আহবান করে এলজিইডি। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় প্রায় ৯৪  লক্ষ টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে মো: জাহাঙ্গির নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টানকে ৮৮ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭২৬ টাকা চুক্তিমূল্যে কার্যাদেশ দেন এলজিইডি। কাজটি কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর ইতিমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
বুধবার (১৬ আগস্ট ) সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, প্রায় পুরো রাস্তার সাববেজ (নিচের স্তর) শেষ করে শুরু হয়েছে ডব্লিউবিএম (দ্বিতীয় স্তর) নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি ডব্লিউবিএম শেষ হয়েছে। তবে পুরো ডব্লিউবিএমের জন্য ব্যবহৃত খোয়া ও ইট অত্যন্ত নিম্নমানের। যা স্থানীয় ভাবে রাবিশ হিসেবে পরিচিত। রাস্তার ওপরে স্তূপ করে ইটের গুঁড়া মিশিয়ে ইটের খোয়া রুলার দিয়ে সমান করা হচ্ছে ।
স্থানীয় মফিজুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি প্রথম থেকে অনিয়ম করা হয়েছে। পঁচা ইটের উপর রোলার দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এই রাস্তা নির্মাণ শেষ পর্যায়ে আসলেও কাজের মান নিন্মমুখী। কত দিন টিকবে কে জানে? আমরা উপজেলা প্রকৌশলীকে অবগত করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান জাহাঙ্গির আলম মুঠোফোনে জানান, কাজটি আমি স্থানীয় একজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। খোঁজ নিয়েছি, কাজের মান তুলনামূলক ভালো আছে। মালামালের দাম বৃদ্ধি কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় থেকে ইট নিচ্ছে। হয়তো কিছু ইটের খোয়া খারাপ বের হয়েছে।
এদিকে কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, অভিযোগ পেয়ে কাজটি পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের খোয়া সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং তাকে নোটিশও দেয়া হয়েছে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *