ক্লিনিকের কক্ষে তরুণীর ঝুলন্ত লাশ

সারাদেশ

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: নওগাঁর পত্নীতলায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকের কক্ষ থেকে আরিফা জান্নাত মীম (২০) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার নজিপুর পৌরসভার ইসলামিয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে।

মৃত তরুণী ওই ক্লিনিকে রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করতেন। সে পাশের ধামইরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহিশ্বর গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে। সে আত্মহত্যা করেছে, না-কি কেউ হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে- তা নিয়ে এলাকায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর থেকে ওই ক্লিনিকের সকল স্টাফ ও রোগীরা ক্লিনিক ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

পুলিশ ও রোগীর স্বজন সূত্রে জানা যায়- নজিপুর পৌরসভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ইসলামিয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত এক বছর ধরে আরিফা জান্নাত নামের ওই তরুণী রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করে আসছিলেন। ওই ক্লিনিকের পরিচালকের নাম নাজিম উদ্দিন ওরফে বাবু। তরুণীটি ওই ক্লিনিক ভবনের নিচ তলার একটি কক্ষে বসবাস করতেন। ওই ভবনে ক্লিনিকটির নার্স ও অন্যান্য নারী কর্মচারীরাও বাস করতেন।

বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন ভবনটির একটি কক্ষের জানালা দিয়ে লাশ ঝুলে থাকতে দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে।

এই ঘটনার পর বেলা ১১টার দিকে ওই ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়- ওই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক-নার্স এবং রোগী নাই। ১০ শয্যার ক্লিনিকটির সব বেড ফাঁকা।

স্থানীয় লোকজন জানান- ওই ক্লিনিকের নারী কর্মচারীর লাশ উদ্ধারের খবর শোনার পর ক্লিনিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা ছিল তারা সবাই পালিয়ে গেছে। ভর্তি হওয়া রোগীরাও ক্লিনিক ছেড়ে চলে যান।

নিহত তরুণীর বাবা মিজানুর রহমান বলেন- মঙ্গলবার বিকেলে মেয়ে আরিফার সঙ্গে ফোনে কথা হয়। তখন মেয়ে তার কোনও সমস্যার কথা বলেনি। তার আচরণ স্বাভাবিক ছিল। আজ সকালে ওই ক্লিনিকের এক নার্স ফোন করে আরিফার মৃত্যুর খবর জানায়।

তার দাবি ও অভিযোগ, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেনা। মীমকে কেউ নির্যাতন করে হত্যার পর তার লাশ ঝুঁলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে দুপুরে পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুল আলম শাহ্ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- ওই কর্মচারী আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। কারণ, লাশ উদ্ধারের সময় ঘরের দরজা ভেতর থেকে শক্তভাবে লাগানো ছিল। দরজা লাগানো অবস্থায় ঘরের ভেতর থেকে বের হওয়ার অন্য কোনও পথ নেই। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত ওই তরুণীর লাশ নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে, ওই তরুণীর মৃত্যুর কারণ প্রকৃত।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *